গাজা শহর দখলের অভিযানে সায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫ ১০:০৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেই পুরো গাজা শহর দখলে নিতে নতুন সামরিক পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ।
অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গিডিয়নস চ্যারিয়টস-২’, যা গাজার ভূচিত্র আমূল পাল্টে দেবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২০ আগস্ট) ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম ‘কান’ এ তথ্য জানায়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ বলেন, “এই অভিযানের পর গাজা শহর আর আগের মতো থাকবে না।”
ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, গাজা শহর দখলে সামরিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সেনাবাহিনী ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনাকে প্রস্তুত করতে যাচ্ছে। আগামী ২ সেপ্টেম্বর থেকে সেনা সমাবেশ শুরু হবে। এরপর মন্ত্রিসভায় এই পরিকল্পনা নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হবে।
এর আগে, চলতি বছরের ৮ আগস্ট ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা ধাপে ধাপে গাজা উপত্যকা দখলের একটি বড় ধরনের পরিকল্পনায় সম্মতি দেয়। আন্তর্জাতিক মহলে যার তীব্র প্রতিক্রিয়া ও নিন্দা দেখা দেয়।
মানবিক বিপর্যয় ও গণহত্যার অভিযোগ
২০২৩ সাল থেকে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ চলছে। অব্যাহত বোমাবর্ষণ ও অবরোধের কারণে খাদ্য সংকটে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৬২ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন দেড় লাখেরও বেশি। বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
এছাড়া, ইসরায়েল জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর সহায়তা এড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে বিকল্প ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালু করে, যা বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে।
এমনকি খাদ্য সহায়তা নিতে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিবর্ষণের ঘটনাও বারবার সামনে এসেছে, যেখানে বহু বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
আইনি জবাবদিহিতা
২০২৪ সালের শেষদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও তার তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার কার্যক্রম চলমান।
১১৬ বার পড়া হয়েছে