স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতায় একক দোষ চাপানো সমাধান নয়: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫ ১২:০১ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
শিশুদের গুঁড়া দুধ খাওয়ানোর প্রবণতা বাড়ছে, আর এতে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকা থাকলেও শুধুমাত্র তাদের দায়ী করা সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
তিনি বলেন, “চিকিৎসকদের ওপর দোষ চাপিয়ে লাভ নেই। সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে, সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে এবং মাতৃদুগ্ধ বিকল্পহীন—এই বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে।”
সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ অডিটোরিয়ামে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “যেখানে হাসপাতালের ধারণক্ষমতা ২,৬০০, সেখানে প্রতিদিন আসছেন প্রায় ৫,০০০ রোগী। ৬৫ শতাংশ ডেলিভারি ক্লিনিকে হলেও বাকি ৩৫ শতাংশ ঘরে হয়, যেগুলোর বেশিরভাগই প্রশিক্ষণবিহীন ধাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত। তাদেরকেও প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে।”
নূরজাহান বেগম বলেন, মাতৃদুগ্ধ প্রসঙ্গে শুধু সরকার বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়—এতে এনজিও, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এমনকি গণমাধ্যমেরও সমান ভূমিকা থাকা উচিত। “মসজিদের ইমাম, মন্দির বা গির্জার ধর্মযাজকরাও খুতবা বা ধর্মীয় আলোচনায় মাতৃদুগ্ধের গুরুত্ব তুলে ধরতে পারেন,” বলেন তিনি।
পিতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে ব্যক্তিগত মতামত জানাতে গিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আমি নিজে একজন মা, তাই বলছি—সব বাবা ছুটি নিয়ে পরিবারের পাশে থাকেন না। বরং উল্টো মায়েদের ওপর চাপ বাড়ে। যদি নিশ্চিত হওয়া যায় যে তারা পরিবারের পাশে থেকে সেবা দেবেন, তাহলে ছুটি দেওয়ার বিষয়ে ভাবা যেতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কেবল সেবা নিতে শিখেছি, কিন্তু সেবা দিতে জানি না—এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মা যদি সুস্থ থাকেন, তবে শিশুও ভালো থাকবে, এবং পাবে পুষ্টিকর মাতৃদুগ্ধ।”
আইনের প্রয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন উপদেষ্টা। বলেন, “দেশে নিয়ম-কানুন থাকলেও বাস্তব প্রয়োগ দুর্বল। আইন প্রয়োগে বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সরোয়ার বারী বলেন, “একটি মেধাসম্পন্ন জাতি গড়ে তুলতে হলে শিশুকে মাতৃদুগ্ধ নিশ্চিত করতেই হবে। কিন্তু বর্তমানে এই হার ৬৫ শতাংশ থেকে কমে ৫৮ শতাংশে নেমে এসেছে—যা উদ্বেগজনক।”
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন—স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহামদ, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নাজমুল হোসেন এবং বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. এস কে রায়।
অনুষ্ঠানে মাতৃদুগ্ধের উপকারিতা এবং গুঁড়া দুধের ক্ষতিকর দিক নিয়ে একাধিক উপস্থাপনা তুলে ধরা হয়।
১৩৩ বার পড়া হয়েছে