হায়দরাবাদে বাংলাদেশি উদ্ধার, আলোচনায় আন্তদেশীয় পাচার চক্র

সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫ ৮:৫৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
হায়দরাবাদ শহরের যৌনপল্লি থেকে বাংলাদেশি এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় পুলিশ।
অভিযোগ রয়েছে, তাকে বাংলাদেশ থেকে পাচার করে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হচ্ছিল। এই ঘটনায় আবারও আলোচনায় এসেছে ভারত-বাংলাদেশে সক্রিয় আন্তদেশীয় মানব পাচার চক্র।
পুলিশ জানায়, এটি হায়দরাবাদে বাংলাদেশি কোনো নারী উদ্ধারের চতুর্থ ঘটনা। এর আগে খাইরতাবাদ, চাদেরঘাট ও বান্দলাগুডার বিভিন্ন যৌনপল্লি থেকেও একাধিক নারীকে উদ্ধার করা হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গত দুই দশক ধরে হায়দরাবাদসহ ভারতের বিভিন্ন শহরে সক্রিয় রয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক পাচার চক্র। শুধু বাংলাদেশ নয়, উজবেকিস্তান, রাশিয়া, ইউক্রেন, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল থেকেও নারীদের পাচার করে এনে যৌন ব্যবসায় নামানো হচ্ছে।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “বাংলাদেশ থেকে নারী ও কিশোরীদের চাকরির প্রলোভন ও উচ্চ বেতনের আশ্বাস দিয়ে ভারতে আনা হয়। সীমান্ত পেরিয়ে এজেন্টদের সহায়তায় তারা অবৈধভাবে প্রবেশ করে। এরপর তৈরি করা হয় ভুয়া পরিচয়পত্র, এবং পাঠানো হয় বিভিন্ন শহরে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের চরম দারিদ্র্যকে কাজে লাগিয়ে চক্রটি অসহায় নারীদের টার্গেট করে। মাছ ধরার ব্যবসা বা অন্য কোনো ছদ্মবেশে এজেন্টরা যোগাযোগ স্থাপন করে এবং তাদেরকে ‘ভালো জীবনের’ স্বপ্ন দেখিয়ে ভারতে নিয়ে আসে।”
ভারতের সেন্ট্রাল সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার বোর্ড (CSWB)-এর এক গবেষণা অনুসারে, ভারতে বাণিজ্যিক যৌন শোষণের শিকার নারীদের মধ্যে প্রায় ২.৭ শতাংশই বাংলাদেশের নাগরিক। পাচার হয়ে আসা এসব নারীকে সাধারণত কলকাতা, দিল্লি, হায়দরাবাদ ও মুম্বাইয়ের দালালদের কাছে বিক্রি করা হয়।
পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, হায়দরাবাদের আত্তাপুর, বান্দলাগুডা, চিন্তালমেট, হিমায়াতসাগর রোড ও চম্পাপেট এলাকায় এসব চক্রের তৎপরতা বেশি। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের দালালদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী একটি নেটওয়ার্ক।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্রের দাবি, এখন সময় এসেছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমন্বিতভাবে এই চক্রগুলো দমন করার। অন্যথায় সীমান্তবর্তী দরিদ্র জনগোষ্ঠী এসব মানবপাচারকারীদের টার্গেট হতে থাকবে।
১২৩ বার পড়া হয়েছে