আয়কর রিটার্ন অডিটে এনবিআরের নতুন নির্দেশনা

রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫ ১:৪৩ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
আয়কর রিটার্ন অডিট ব্যবস্থায় নতুন নির্দেশনা জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নতুন এ নির্দেশনার মাধ্যমে অডিট কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বাড়বে, রাজস্ব আহরণে গতি আসবে এবং করদাতাদের আস্থাও বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার (১৭ আগস্ট) এনবিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আয়কর রিটার্ন অডিট নির্দেশনা, ২০২৫’ নামে এই নতুন নির্দেশনায় রিটার্ন যাচাই, অডিটের প্রক্রিয়া, প্রতিবেদন প্রস্তুত ও নিষ্পত্তির প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, আয়কর আইন, ২০২৩-এর ১৮০ ও ১৮২ ধারা অনুযায়ী করদাতার রিটার্নে কোনো অসঙ্গতি বা ঝুঁকি শনাক্ত হলে, তা অডিটের আওতায় আনা হবে। এর লক্ষ্য কর ফাঁকি রোধ, কর সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক আইনি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
ঝুঁকিভিত্তিক বাছাই পদ্ধতি
রিটার্ন নির্বাচন হবে ঝুঁকির মাত্রা অনুযায়ী—একটি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির মাধ্যমে, যাতে মানবীয় হস্তক্ষেপ সীমিত থাকে। তবে ম্যানুয়াল বা কাগজে দাখিল করা রিটার্নের ক্ষেত্রে র্যান্ডম নির্বাচন পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। কোম্পানি ও অন্যান্য করদাতাদের রিটার্ন পৃথকভাবে যাচাই করে বোর্ড অনুমোদনের ভিত্তিতে বাছাই করা হবে।
যেসব রিটার্ন অডিটে আসবে না
প্রথমবারের রিটার্ন বা ইতোমধ্যে প্রসেস হওয়া রিটার্ন অডিটে আনা হবে না—যদি না তাতে সরাসরি রাজস্ব ক্ষতির ইঙ্গিত মেলে। একই করদাতাকে তিন বছর টানা অডিটে না আনার বিধান রাখা হয়েছে। তবে লোকসান, শূন্য আয় বা অস্বাভাবিকভাবে কম আয় দেখালে রিটার্ন অডিটে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ রয়েছে।
প্রথমবার অডিটে না আসা করদাতাদের রিটার্নের কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ নির্বাচনের কথাও বলা হয়েছে।
অডিটের ধাপগুলো
রিটার্ন নির্বাচন হওয়ার পর করদাতাকে ৩০ দিনের মধ্যে নোটিশ দেওয়া হবে। সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিলে অডিট থেকে অব্যাহতি মিলতে পারে। অন্যথায় কর পরিদর্শক সরেজমিনে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেবেন। করদাতা চাইলে সংশোধিত রিটার্ন জমা দিতে পারবেন, যা করলে বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে। অন্যথায় আইন অনুযায়ী কর নির্ধারণ করা হবে।
অগ্রগতির বিষয়ে মাসিক প্রতিবেদন বোর্ডে জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ব্যক্তি ও কোম্পানি করদাতাদের জন্য বিশেষ নজরদারি
ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে রিটার্নে বেতন, ব্যাংক জমা, ভাড়া, কৃষি আয়, রেমিট্যান্স, বিনিয়োগ আয়, ব্যয় এবং জীবনযাত্রার মান খুঁটিয়ে দেখা হবে—আয়ের সঙ্গে সম্পদের সংগতি আছে কি না তা বিশেষভাবে যাচাই করা হবে।
কোম্পানি করদাতাদের ক্ষেত্রে নিরীক্ষিত হিসাব জমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একই সঙ্গে টার্নওভার, ব্যাংক লেনদেন, ব্যয়, উৎসে কর কর্তন, অপ্রাসঙ্গিক ব্যয় ও ঋণ প্রদর্শন যথাযথভাবে হয়েছে কি না—তাও অডিটের আওতায় আসবে।
১৩৪ বার পড়া হয়েছে