তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ-চীন

রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫ ৬:৫২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
তিস্তা নদীভিত্তিক মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন অবশেষে দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ উদ্যোগে ১২ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে শুরু হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ইতোমধ্যে চীনা দূতাবাসের রাজনৈতিক শাখার পরিচালক জং জিং-এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল তিস্তা অববাহিকার মাঠ পর্যায়ে জরিপ সম্পন্ন করেছে। প্রতিনিধিদলটি স্থানীয় রাজনৈতিক দল, নদী রক্ষা সংগঠন এবং তিস্তা পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে।
প্রকল্পের আওতায় প্রথম ৫ বছরে গুরুত্ব পাবে সেচব্যবস্থা উন্নয়ন, নদীভাঙন রোধ এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ। পরিকল্পনাটি ১০ বছর মেয়াদি হলেও প্রাথমিক ধাপে অবকাঠামো উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ইআরডি থেকে পরিকল্পনার খসড়া চীন সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, উত্তরাঞ্চলের প্রায় দুই কোটি মানুষের জীবিকা তিস্তা নদীকে ঘিরে। কৃষক, জেলে ও খেটেখাওয়া সাধারণ মানুষ বছরের পর বছর ধরে নদীভাঙন ও আকস্মিক বন্যায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। রিভারাইন পিপলের এক গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি বছর তিস্তার ভাঙন ও প্লাবনে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, “দীর্ঘ এক দশক ধরে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে আমরা আন্দোলন করে আসছি। অতীতে বিভিন্ন সরকার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান সরকারের উদ্যোগে তিস্তা পাড়ের মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্ষায় ভারতের সব কপাট খুলে দেওয়ার ফলে তিস্তার পানি হঠাৎ করে বিপজ্জনক হারে বেড়ে যায়, যা ভাঙন এবং ফসলহানির বড় কারণ। অপরদিকে শুষ্ক মৌসুমে পানির একচেটিয়া প্রত্যাহারের ফলে নেমে আসে নদীর প্রাণহানি। তাই দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে তিস্তা মহাপরিকল্পনাকে দেখছেন এলাকাবাসী।
১১৫ বার পড়া হয়েছে