চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ কার্যক্রম শুরু

শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫ ৬:৫৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি জ্বালানি তেল সরবরাহ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় পদ্মা অয়েলের ডেসপাস টার্মিনাল এলাকায় এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) পরিচালিত এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবছর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় প্রায় ২৭ লাখ টন ডিজেল পরিবহন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক আমিনুল হক।
তিনি বলেন, “গত দেড় মাস ধরে পরীক্ষামূলকভাবে পাইপলাইনে তেল সরবরাহ চালানো হয়েছে। এ সময়ে কোনো বড় ধরনের সমস্যা দেখা যায়নি। সফলভাবে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শেষ করেই আমরা আজ আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলাম।”
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল পরিবহনের এই উদ্যোগ নেয়া হয় ২০১৬ সালে, তবে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। তিনবার সময়সীমা বাড়ানোর পর চলতি বছরের মার্চ মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হয়।
পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল সরবরাহের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয় ২২ জুন ২০২৫ এবং ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৪ কোটি ৮২ লাখ লিটার ডিজেল পরিবহন করা হয়েছে।
নতুন এই পাইপলাইন ব্যবস্থায় খরচ সাশ্রয়ের দিকটি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে নদীপথে তেল এনে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে পাঠানো হতো, সেখান থেকে সড়কপথে ঢাকায় পরিবহন করা হতো, যা ছিল ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ চালু হলে বছরে ৩২৬ কোটি টাকা আয় সম্ভব হবে, যেখানে পরিচালন ব্যয় হবে ৯০ কোটি টাকা। ফলে প্রকল্পটি বছরে প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে সক্ষম হবে। ধারণা করা হচ্ছে, ১৬ বছরের মধ্যে প্রকল্প খরচ উঠে আসবে।
প্রকল্পটির আওতায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল এবং সেখান থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত দুটি অংশে মোট পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বসানো হয়েছে বুস্টার পাম্প, ৯টি জেনারেটরসহ বিভিন্ন আধুনিক সরঞ্জাম।
প্রকল্পের শুরুতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৮৬১ কোটি টাকা, যা পরে বাড়িয়ে ৩৬৯৯ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। বিপিসির এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।
জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, “এই পাইপলাইন প্রকল্প জ্বালানি নিরাপত্তা ও সরবরাহ ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বা প্রাকৃতিক দুর্যোগেও এখন ডিজেল সরবরাহ ব্যাহত হবে না। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ ও ‘সিস্টেম লস’ অনেকাংশেই রোধ করা সম্ভব হবে।”
১০৫ বার পড়া হয়েছে