‘মুহাম্মদ ইউনূস ও শেখ হাসিনার দ্বন্দ্বের কারণে আমি ক্ষতিগ্রস্ত’

রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫ ৪:০৩ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ করেছেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরেই তিনি আজ রাজনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান-এ প্রকাশিত এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন গার্ডিয়ানের প্রধান প্রতিবেদক ড্যানিয়েল বফি, যেখানে টিউলিপ সিদ্দিকের রাজনৈতিক জীবন, পারিবারিক যোগাযোগ এবং বাংলাদেশের রাজনীতির প্রভাব নিয়ে খোলামেলা আলোচনা উঠে এসেছে।
টিউলিপ বলেন, “আমি কয়েকদিনের মধ্যেই একটি সাজানো বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। অথচ এখনও জানি না আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো কী কী। আমি এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক তলবপত্রও দেখিনি।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতি আমার জীবন পাল্টে দিয়েছে।” গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে রাশিয়ান একটি কোম্পানির ৫ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তিকে কেন্দ্র করে টিউলিপের নাম উঠে এসেছে। এই প্রকল্পটি ছিল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে, যেখানে টিউলিপের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে কিছু ওয়েবসাইটের তথ্যে।
এই প্রসঙ্গে টিউলিপ ব্যাখ্যা করেন, ২০১৩ সালে তিনি ও তাঁর বোন লন্ডন থেকে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন শেখ হাসিনার সফরে যোগ দিতে। সেখানেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একটি ছবি তোলা হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক আলোচনায় জড়িত ছিলাম না। ছবিটি একটি আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে তোলা হয়েছিল, মাত্র দুই মিনিটের জন্য।”
সাক্ষাৎকারে উঠে আসে, ইউনূসের চলতি বছরের যুক্তরাজ্য সফরের সময় টিউলিপ তাঁর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু অধ্যাপক ইউনূস সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন।
এছাড়া, ব্রিটেনের অর্গানাইজড ক্রাইম এজেন্সি (NCA) সম্প্রতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্কিত দুই ব্যক্তির লন্ডনের প্রায় ৯০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পত্তি জব্দ করেছে। এর একটি বাড়িতে টিউলিপের মা বসবাস করতেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই বিষয়ে টিউলিপের বক্তব্য, “এটার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।”
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, টিউলিপ বর্তমানে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে যুক্তরাজ্যে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। সাক্ষাৎকারে তিনি পরিষ্কারভাবে জানান, “আমি এখানে আমার খালাকে রক্ষা করতে আসিনি। আমি জানি তাঁর সরকারের কীভাবে পতন হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমি আশা করি, বাংলাদেশের মানুষ তাদের কাঙ্ক্ষিত সমাধান পাবে।”
১১১ বার পড়া হয়েছে