নড়াইলে সৎ মায়ের হাতে শিশুহত্যা: সৎ মায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫ ১১:২২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নড়াইলের লোহাগড়ায় সৎ মায়ের হাতে তিন বছরের শিশু নুসরাত জাহান রোজা হত্যার ঘটনায় জোবাইদা বেগম (২৫) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গিলাতলা গ্রামের বাসিন্দা সজীব কাজীর দ্বিতীয় স্ত্রী জোবাইদা বেগম। ২০২০ সালে সজীবের প্রথম স্ত্রী রূপা বেগমের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ওই সংসারে জন্ম নেওয়া দুই সন্তান—পাঁচ বছর বয়সী ইয়াসিন ও তিন বছর বয়সী রোজা—বাবার বাড়িতে দাদা আবুল খায়েরের কাছে থাকত। পরে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সজীব দ্বিতীয় বিয়ে করেন জোবাইদাকে।
২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে বড় ভাই ইয়াসিনের মারধরে কান্না শুরু করে ছোট বোন রোজা। কান্না থামাতে ব্যর্থ হয়ে সৎ মা জোবাইদা তাকে ঘরের এক কক্ষে নিয়ে মুখ চেপে ধরেন, যার ফলে শ্বাসরোধে শিশুটি মারা যায়। পরবর্তীতে মৃতদেহ একটি কম্বলে মুড়িয়ে শ্বশুরের ঘরের বারান্দায় খাটের ওপর রেখে দেন জোবাইদা।
দুপুরে বাড়িতে ফিরে দাদা খায়ের কাজী নাতনিকে গোসল করাতে ডাকেন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তার স্ত্রী পান্না বেগমের জিজ্ঞাসাবাদে জোবাইদা জানায়, রোজা বারান্দায় ঘুমাচ্ছে। সেখানে গিয়ে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
পরে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ওই দিনই সজীব কাজী ও জোবাইদা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তবে তদন্তে জড়িত না থাকায় সজীবকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার পরদিন নিহত রোজার দাদা খায়ের কাজী লোহাগড়া থানায় জোবাইদাকে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত আজ রায় ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট তারিকুজ্জামান লিটু রায়ের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
১১৭ বার পড়া হয়েছে