প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মেয়েকে খুন, বাবাসহ তিনজনের ফাঁসি

বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫ ৯:৫৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
কিশোরগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের ১২ বছরের মেয়েকে খুন করেছিলেন বাবা। সেই ঘটনায় আজ বুধবার আদালত বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। তবে খালাস পেয়েছেন নিহত শিশুর মা।
কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ নুরুল আমীন বিপ্লব এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—বাবা আনোয়ারুল ইসলাম আঙ্গুর, চাচা খুরশিদ মিয়া ও চাচাতো ভাই সাদেক মিয়া। রায় ঘোষণার সময় তিনজনই পলাতক ছিলেন। পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।
জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. জালাল উদ্দিন বলেন, “এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তবে মা নাজমুন্নাহার নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।”
ঘটনার পেছনের কাহিনি
২০১৬ সালের ১০ আগস্ট রাত। করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া জহিরকোণা গ্রামে ঘটে এ মর্মান্তিক ঘটনা। জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল প্রতিবেশী আবু বকর সিদ্দিকের পরিবারের সঙ্গে। সেই বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়ে মীরা আক্তারকে (১২) ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেন আনোয়ারুল ইসলাম আঙ্গুর, তার ভাই ও ভাতিজা। পরে মেয়েটির মরদেহ বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ে ফেলে রেখে আসেন তারা।
পরদিন সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। প্রথমে কৌশলে নিহতের বাবা আঙ্গুর নিজেই বাদী হয়ে আবু বকর সিদ্দিকসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। কিন্তু তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য—আসলে আঙ্গুরই মেয়ে হত্যার মূল হোতা।
এরপর ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর করিমগঞ্জ থানার এসআই অলক কুমার দত্ত বাদী হয়ে নতুন একটি মামলা করেন, যেখানে অভিযুক্ত করা হয় আসল তিন খুনিকে এবং মায়ের নামও রাখা হয় অভিযুক্তদের তালিকায়। কিন্তু মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ায় মা নাজমুন্নাহার নির্দোষ প্রমাণিত হন।
১০৬ বার পড়া হয়েছে