হিরোশিমায় পারমাণবিক হামলার ৮০ বছর: শান্তির বার্তা ও উত্তেজনার ছায়া

বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫ ৪:৫৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ স্মৃতি বহন করে চলা হিরোশিমায় পারমাণবিক হামলার ৮০ বছর পূর্তি পালন করেছে জাপান।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমান এনোলা গে হিরোশিমা শহরের ওপর ফেলা হয় ইতিহাসের প্রথম পারমাণবিক বোমা ‘লিটল বয়’। এতে তাৎক্ষণিকভাবে এবং পরবর্তীতে বিকিরণের কারণে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ প্রাণ হারান।
বার্ষিক এই স্মরণ অনুষ্ঠানে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়, অংশ নেন হিরোশিমার বেঁচে যাওয়া নাগরিক, শিক্ষার্থী, সরকারি কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরা। গরমের মধ্যেও অনেকেই কালো পোশাকে শ্রদ্ধা জানান শহীদদের প্রতি। শহরের মধ্যস্থলে অবস্থিত পারমাণবিক স্মৃতি স্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল সেই বিখ্যাত গম্বুজাকৃতির ধ্বংসাবশেষ, যা এখনো যুদ্ধের ভয়াবহতার নীরব সাক্ষী।
হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই তার ভাষণে বিশ্বজুড়ে বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনা এবং পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা দেখায়, বিশ্ব আবারও ইতিহাস থেকে কোনো শিক্ষা নিচ্ছে না।”
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেন, “বিশ্বকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার জন্য জাপানকে নেতৃত্ব দিতে হবে। হিরোশিমা ও নাগাসাকির অভিজ্ঞতা আমাদের সেই দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।”
হিরোশিমার পর ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে দ্বিতীয় পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়, যাতে নিহত হন প্রায় ৭৪ হাজার মানুষ। এর এক সপ্তাহের মধ্যে, ১৫ আগস্ট জাপান আত্মসমর্পণ করে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটে।
বর্তমানে হিরোশিমা একটি আধুনিক ও উন্নত শহর, যেখানে বসবাস করছে প্রায় ১২ লাখ মানুষ। তবে শহরের অতীত এখনো জীবন্ত অনেকের হৃদয়ে।
এবারের স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রায় ১২০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছে তাইওয়ান ও ফিলিস্তিন। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত থাকলেও রাশিয়া ও চীনের প্রতিনিধিরা অনুপস্থিত ছিলেন।
১২৪ বার পড়া হয়েছে