অবৈধ বালু উত্তোলন: চরবংশীতে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫ ৭:১৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার মেঘনা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিএনপি এবং তাদের অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতাকর্মী এই অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত।
নদী থেকে এভাবে বালু তুলতে থাকায় নদীভাঙনের আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই বালু তোলা হচ্ছে। আগে এ কাজের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যুক্ত থাকলেও, দলটি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বিএনপির স্থানীয় নেতারা নিয়ন্ত্রণ নেয়। অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কবির সরকার, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাসেল ব্যাপারী, সাবেক যুবদল নেতা মহি উদ্দিন, ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আদম আলী, ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল নেতা জালাল সরদার এবং আরও কয়েকজন কর্মী।
রায়পুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান খান জানান, নদীতে অন্তত ৩০টি ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ১০টি ড্রেজার ধ্বংস করা হয়েছে, বাকি ড্রেজারগুলোও পর্যায়ক্রমে অপসারণ করা হবে।
ভাঙনের শঙ্কা ও স্থানীয়দের অভিযোগ
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বালু তোলার ফলে নদীপাড়ের ফসলি জমি ও বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। পানিরঘাট এলাকার কৃষক জলিল মিয়া বলেন, “আমাদের উর্বর জমিগুলো এখন নদীতে বিলীন হওয়ার পথে। বাধা দিতে গেলে আমাদের হুমকি দেওয়া হয়।”
সরেজমিনে মিয়ারহাট, পানিরঘাট ও হাজীমারা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নদীতে বেশ কয়েকটি ড্রেজার দিয়ে রাতদিন বালু তোলা হচ্ছে। বালু তোলার তদারকিতে রয়েছেন স্থানীয় কিছু যুবক।
নেতাদের বক্তব্য
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত জালাল সরদার নিজের একটি ড্রেজার থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, “প্রশাসনের অভিযানের পর বালু তোলা আপাতত বন্ধ রেখেছি।”
বিএনপি নেতা কবির সরকার বলেন, “এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়নে বালু দরকার। আমরা চেষ্টা করি যাতে নদীপারের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।”
স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাসেল ব্যাপারী এবং যুবদলের সাবেক নেতা মহি উদ্দিন দাবি করেন, তাঁরা গভীর নদী অঞ্চল থেকেই বালু তুলছেন এবং কারও জমিতে ভাঙনের কারণ হচ্ছেন না।
তবে সাবেক ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, “এই অঞ্চলে সরকারের কোনো অনুমোদন নেই বালু তোলার জন্য। তবে দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পর কিছু নেতাকর্মী ফিরে এসে এখন বালু ব্যবসায় জড়াচ্ছেন।”
দলের অবস্থান
এ বিষয়ে রায়পুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম জানান, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। দলীয়ভাবে কোনো অপকর্মকে আমরা সমর্থন করি না। যদি কোনো নেতা এই কার্যক্রমে জড়িত থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
১২৪ বার পড়া হয়েছে