শাহবাগে ‘জুলাই যোদ্ধা’দের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, পুলিশের লাঠিচার্জ

শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫ ৪:৫১ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে নিজেদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করা দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে পুলিশ লাঠিচার্জ করে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর শাহবাগ মোড় থেকে অবরোধকারীদের সরিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত হয় বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে, যখন একটি পক্ষ শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভে নামে। তারা নিজেদের 'জুলাই যোদ্ধা' পরিচয়ে শহীদদের স্বীকৃতি ও বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে সড়কে অবস্থান নেয়। রাতভর সড়কের মাঝে ত্রিপল টাঙিয়ে তারা সেখানে অবস্থান করে এবং অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য দেন। চারপাশে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয় তারা।
শুক্রবার বিকেলে আরেকটি পক্ষ, যারা নিজেদের ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে, শাহবাগে এসে অবরোধের বিরোধিতা শুরু করে। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা থেকে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং শাহবাগ মোড় থেকে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম জানান, প্রথম দলটি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শাহবাগ অবরোধ করে রাখে এবং বারবার অনুরোধ করেও তারা সরেনি। শুক্রবার আরেকটি পক্ষ একই দাবিতে সেখানে উপস্থিত হলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, শুক্রবার বিকেলে বিরোধী পক্ষের উপস্থিতির পরই মূলত উত্তেজনার সূচনা হয়। নিজেদের ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করা এই পক্ষটি অভিযোগ করে, অবরোধকারীরা জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি করছে এবং তাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ। তারা সাংবাদিকদের বলেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার চেতনা নিয়ে কেউ জনগণের জীবনযাত্রা অচল করে না।
অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। চারপাশের সড়কে ব্যারিকেড থাকায় বিকল্প রাস্তাও ছিল সীমিত। তবে বিকেলে পাশের সড়কগুলো খুলে দিলে কিছুটা স্বস্তি ফেরে।
অবরোধকারীরা যে দাবিগুলো তুলেছেন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
জুলাই শহীদ ও যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য আজীবন চিকিৎসা, শিক্ষা ও কল্যাণ সুবিধা
পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা
দমন-পীড়নের বিচার ও একটি স্বাধীন কমিশন গঠন
গত ২২ জুন 'জুলাই সনদ' বাস্তবায়নে সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় 'জুলাই যোদ্ধা সংসদ' উদ্বেগ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করে। তারা হুঁশিয়ার করে বলেন, সরকার প্রতিশ্রুতি না রাখলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক আরমান হোসেন শাফিন ও মুখপাত্র মুশফিকুর রহমান আশিকসহ অন্যান্য নেতারা।
১২৩ বার পড়া হয়েছে