দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক ঘাঁটি চীনের, বাড়ছে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ

শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫ ১২:২৩ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত এলাকায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টরজুড়ে শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করেছে চীন।
সেখানে পারমাণবিক বোমারু বিমান রাখার সক্ষমতাসহ নানা উন্নত সামরিক স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। নতুন স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ব্রিটিশ দৈনিক ইনডিপেনডেন্ট শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
চীনের এই সামরিক ঘাঁটিটি গড়ে তোলা হয়েছে ‘মিসচিফ রিফ’ নামক একটি কৃত্রিম দ্বীপে, যা স্প্রাটলি দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্ভুক্ত। স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা এশিয়া মেরিটাইম ট্রান্সপারেন্সি ইনিশিয়েটিভ (এএমটিআই)।
প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, দ্বীপজুড়ে রয়েছে সুসংগঠিত নগরের মতো অবকাঠামো, দীর্ঘ রানওয়ে, বড় আকারের বিমান হ্যাঙ্গার, ক্ষেপণাস্ত্র বসানোর স্থান এবং সামরিক রাডার সিস্টেম।
‘মানব ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুত সামরিকীকরণ’
এএমটিআই-এর পরিচালক গ্রেগরি পোলিং অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজকে বলেন, “এই ঘাঁটিতে আছে ৭২টিরও বেশি যুদ্ধবিমান হ্যাঙ্গার, আধুনিক বন্দর, ভূমি থেকে আকাশে ও জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। এটি মানব ইতিহাসের অন্যতম দ্রুত ও ব্যাপক ড্রেজিং ও ভূমি পুনর্গঠন প্রকল্প।”
তিনি আরও বলেন, “এই অবকাঠামো দক্ষিণ চীন সাগরের সামরিকীকরণকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠছে।”
দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য বিস্তার
এএমটিআই জানায়, চীন ইতোমধ্যে স্প্রাটলি দ্বীপপুঞ্জে সাতটি এবং প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জে ২০টি অবস্থানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মধ্যে চারটি পুরোপুরি নৌ ও বিমানঘাঁটিতে রূপান্তরিত হয়েছে। স্কারবোরো শোয়াল এলাকায় চীনা কোস্ট গার্ডের স্থায়ী উপস্থিতি থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়নি।
গত মে মাসে স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, চীন প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের উডি আইল্যান্ডে দূরপাল্লার এইচ-৬ বোমারু বিমান অবতরণ করিয়েছে।
আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে চীনের দখলনীতি
চীন দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরো অংশেই সার্বভৌমত্ব দাবি করে। এর মধ্যে ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের দাবিকৃত অঞ্চলও রয়েছে। ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত চীনের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে রায় দিলেও বেইজিং তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়।
চীনের দাবি, এসব সামরিক স্থাপনা প্রতিরক্ষামূলক। কিন্তু প্রতিবেশী দেশগুলো ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতে, এটি আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়ানোর কৌশল।
চীনের নীরবতা
ইনডিপেনডেন্ট-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট চিত্র ও তথ্য প্রকাশের পর চীনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
১১৮ বার পড়া হয়েছে