বৈরী আবহাওয়ায় ইলিশ ধরতে না পেরে বিপাকে জেলেরা

রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫ ৭:৩৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সমুদ্রে মাছ ধরার মৌসুম শুরু হলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছেন উপকূলীয় এলাকার জেলেরা। দীর্ঘদিন সাগরে যেতে না পেরে ট্রলারে দিন কাটাতে হচ্ছে অনেককে।
তেমনি একজন নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে আসা এফবি মা-বাবার দোয়া ট্রলারের মাঝি তৈয়ব মাঝি (৩৫)। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পটুয়াখালীর মহিপুর বন্দরে ট্রলারেই রান্না করে খাচ্ছেন তিনি ও তাঁর ২০ জন সঙ্গী।
গত ১১ জুন সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পর তৈয়ব মাঝি সাগরে নামেন প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকার সরঞ্জাম নিয়ে। চারদিনে মাত্র ৩ লাখ টাকার মাছ পেয়ে বৈরী আবহাওয়ায় বাধ্য হয়ে আশ্রয় নেন আলীপুর বন্দরে। পরে ফের পাঁচ লাখ ৩০ হাজার টাকার সরঞ্জাম নিয়ে সমুদ্রে গেলেও এবার ফিরেছেন মাত্র ২ লাখ ৮০ হাজার টাকার মাছ নিয়ে।
ট্রলারের এক জেলে ওহাব মিয়া বলেন, “বাড়িতে গেলে লোকজন পাওনা টাকা চাইবে, আবার পরিবারেও খরচ লাগে। কিছুই তো হয় না। এখানে বসে খেয়ে শুধু ঋণের বোঝা বাড়ছে।”
শুধু তৈয়ব মাঝির ট্রলার নয়, একাধিক ট্রলার থেকেই ফিরছে একই হতাশা। শুক্রবার (২৫ জুলাই) ঘুরে দেখা যায়, মহিপুর-আলীপুর ও কুয়াকাটার মাছ বাজারে অনেকে ফিরছেন অল্প মাছ নিয়ে, কেউ আবার খালি হাতে। বাজারে ইলিশের দামও অনেকের নাগালের বাইরে। এক কেজির কাছাকাছি ইলিশের মণ বিক্রি হচ্ছে ৯৮ হাজার টাকায়। ছোট ইলিশ ৪০-৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আলীপুর আড়তদার কামাল হোসেন জানান, “ট্রলার পাঠালেও দুই-তিন দিনের মাথায় ঝড়ের কারণে ফিরে আসে। দেড় মাস ধরে ব্যবসা মার খাচ্ছে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবহাওয়া ও পরিবেশগত কারণে ইলিশ সংকট বাড়ছে।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রাজিব সরকার জানান, জলবায়ু পরিবর্তন, অতিরিক্ত প্লাস্টিক দূষণ ও অবৈধ জালের ব্যবহারে সমুদ্রের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে মাছ, বিশেষ করে ইলিশের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটছে। সরকারের পক্ষ থেকে অবৈধ জাল ও প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, “অবরোধ শেষে মাছ ধরা শুরু হলেও আবহাওয়া এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আশা করছি, বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলে আবার ভালো মাছ ধরা যাবে।”
১২০ বার পড়া হয়েছে