সারাদেশ

কক্সবাজারে ভয়াবহ ভাঙন: উপড়ে গেছে হাজারো ঝাউগাছ, হুমকিতে সরকারি স্থাপনা

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার প্রতিনিধি

রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫ ৬:০০ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
অমাবস্যা ও নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট অস্বাভাবিক জোয়ারে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন।

প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে ধসে পড়েছে বালিয়াড়ি, উপড়ে গেছে কয়েক হাজার ঝাউগাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সৈকতের বিভিন্ন অবকাঠামো, যার মধ্যে রয়েছে পর্যটন পুলিশের পুলিশ বক্স, অস্থায়ী দোকান ও ওয়াচ টাওয়ার।

গত দুই দিনে শৈবাল, লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, সাগরের ঢেউয়ে সৈকতের বালু সরে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কোথাও কোথাও বৈদ্যুতিক খুঁটির ওপর ঝাউগাছ পড়ে থাকায় ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। স্থানীয়দের দাবি, ভাঙন অব্যাহত থাকলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, জেলা প্রশাসনের তথ্যকেন্দ্র ও পর্যটন পুলিশের অফিসসহ সরকারি নানা স্থাপনাও হুমকির মুখে পড়বে।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের তথ্যমতে, ১৯৬১-৬২ সালে প্রথম ঝাউগাছ রোপণ শুরু হয় নাজিরারটেক থেকে হিমছড়ি পর্যন্ত ১২ হেক্টর এলাকায়। ১৯৭৪ সাল থেকে ধাপে ধাপে এই বনাঞ্চল সম্প্রসারণ পেয়ে বর্তমানে প্রায় ৩০০ হেক্টরে পৌঁছায়, যেখানে সাড়ে সাত লাখের বেশি ঝাউগাছ রয়েছে। উপকূলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও দুর্যোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘূর্ণিঝড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং তীব্র ঢেউয়ের কারণে এসব গাছ ধ্বংস হচ্ছে।

বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম বলেন, “ঢেউয়ের আঘাতে গাছের গোড়া থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, ফলে গাছ উপড়ে পড়ছে। উপকূল রক্ষায় আধুনিক ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।”

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কক্সবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম জানান, “প্রতিবছর জিও ব্যাগ বসিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী সমাধান নয়। উপকূল রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও শক্তিশালী বাঁধ ছাড়া কার্যকর প্রতিরোধ সম্ভব নয়।”

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজারে যেমন পরিবেশগত হুমকি তৈরি হয়েছে, তেমনি পর্যটন শিল্পেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

১১১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন