গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও খাদ্য সংকট: ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত

রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫ ৫:৪২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
অবরুদ্ধ গাজায় তীব্র ক্ষুধা সংকটের মাঝে ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। পাশাপাশি অপুষ্টিজনিত কারণে আরও অনেকের মৃত্যু ঘটেছে বলে জানা গেছে।
রোববার (২৭ জুলাই) আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার একদিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪২ জন ত্রাণ পাওয়ার জন্য মরিয়া ছিল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে জানা যায়, অবরোধের কারণে খাদ্যের অভাবে পাঁচজনের মৃত্যুও ঘটেছে। যুদ্ধে শুরু থেকে অপুষ্টিজনিত মৃত্যু হয়েছে ১২৭ জনের, যার মধ্যে ৮৫ জন শিশু।
মানবিক সংকট বাড়ার ফলে বিশ্বজুড়ে নিন্দার মুখে ইসরায়েল শনিবার রাতে ঘোষণা দেয়, রোববার থেকে বেসামরিক এলাকা ও ত্রাণ করিডোরে সাময়িক হামলা বিরতি থাকবে। তবে কোন এলাকায় এই বিরতি প্রযোজ্য হবে, তা স্পষ্ট করেনি ইসরায়েল।
ইসরায়েল এই পরিস্থিতির জন্য জাতিসংঘকে দায়ী করেছে, কিন্তু জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলছে, ইসরায়েলই যথাযথ অনুমতি না দেয়ায় ত্রাণ সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করছে।
ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা আকাশপথে ত্রাণ পাঠাচ্ছে। তাদের মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতও গাজায় আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আকাশপথে ত্রাণ বিতরণ ঝুঁকিপূর্ণ এবং সড়কপথের বিকল্প হতে পারে না।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, আকাশপথে ত্রাণ দেয়া সমস্যার মূল সমাধান নয়, বরং তা ব্যয়বহুল এবং অকার্যকর। তিনি ইসরায়েলকে অবরোধ তুলে নিতে, সড়কপথ খোলার ও মানুষের নিরাপদ চলাচলের ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছেন।
গাজার আল জাজিরার প্রতিনিধি হানি মাহমুদ বলেন, ইসরায়েলের সাময়িক বিরতি কার্যকর নয়, কারণ এতদিনে মাত্র সাতটি প্যালেট ত্রাণই পৌঁছেছে, যা একটি ট্রাকের চেয়ে কম। এছাড়া এসব ত্রাণ বিপদজনক এলাকায় ফেলা হয়, যা রাতের আঁধারে সংগ্রহ করা অসম্ভব।
তিনি বলেন, “এখন গাজায় গণহারে ক্ষুধাজনিত মৃত্যু হচ্ছে, যা চিকিৎসা সূত্রও নিশ্চিত করেছে।”
তবে গাজার ক্ষুধার মধ্যে ইসরায়েলের হামলা থামছে না। শনিবার খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। এই এলাকা ইসরায়েলের ঘোষিত ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হলেও সেখানে হামলা চলছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, জ্বালানি ও যন্ত্রাংশের অভাবে শীঘ্রই তারা জীবনরক্ষাকারী সেবা দিতে পারবে না এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা কামনা করেছে।
এক বিবৃতিতে তারা বলেন, “ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে জরুরি জ্বালানি ও যন্ত্রাংশ ঢুকতে দিতে হবে।”
১১০ বার পড়া হয়েছে