আন্তর্জাতিক

আর্মেনিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ‘জাঙ্গেজুর করিডোর’ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে

ডেস্ক রিপোর্ট
ডেস্ক রিপোর্ট

রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫ ৫:৩৯ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
আর্মেনিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত একটি বিতর্কিত ভূমি করিডোর পরিকল্পনা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে, যা আজারবাইজানকে দক্ষিণ আর্মেনিয়ার সিউনিক প্রদেশ হয়ে সরাসরি নাখিজেভান অংশে পৌঁছানোর সুযোগ করে দিত।

যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব করেছিল, ১০০ বছরের জন্য করিডোরটি লিজে দেওয়া হবে এবং একটি মার্কিন কোম্পানি এর পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে।

তবে আর্মেনিয়ান প্রশাসন এবং জনসাধারণ উভয়ই এ প্রস্তাবকে ‘সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে হুমকি’ হিসেবে দেখছে।

যুক্তরাষ্ট্রের তুরস্কে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত থমাস ব্যারাকের দেওয়া এই প্রস্তাবকে ‘শান্তি উদ্যোগ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করলেও আর্মেনিয়ান রাজনীতিক ও বিশ্লেষকরা এটিকে একটি কূটনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন, এর মাধ্যমে আজারবাইজান ও তুরস্কের পুরনো লক্ষ্য—আর্মেনিয়ার ভূখণ্ড ব্যবহার করে আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তার—বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।

প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের প্রেসসচিব নাজেলি বাগদাসারিয়ান জানান, আর্মেনিয়ার সংবিধান অনুযায়ী বিদেশি কর্তৃত্বে কোনও অবকাঠামো নির্মাণের জন্য জমি লিজ দেওয়া আইনত নিষিদ্ধ। শুধু কৃষিকাজ বা পশুপালনের উদ্দেশ্যে জমি ব্যবহার অনুমোদিত।

আর্মেনিয়ার পার্লামেন্ট সদস্য আরমান ইয়েগোয়ান বলেন, “এই প্রস্তাবে আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।”

যদিও প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ান সাম্প্রতিক এক সংবাদ সম্মেলনে কিছুটা অস্পষ্ট মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এমন একটি প্রকল্পকে আইনি কাঠামোর আওতায় আনা যেতে পারে এবং চুক্তির শেষে অবকাঠামোর মালিকানা ফেরত আসবে আর্মেনিয়ার কাছে। তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে—সরকার কি তবে গোপনে আপসের পথে হাঁটছে?

বিরোধী দলগুলোর দাবি, ‘জাঙ্গেজুর করিডোর’ প্রকল্প আর্মেনিয়াকে ইরানের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ভূরাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করার একটি কৌশল। তারা সতর্ক করে বলছে, আজারবাইজান ইতিমধ্যে জানিয়েছে এই করিডোরে আর্মেনিয়ার কাস্টমস বা নিরাপত্তা বাহিনীর কোন ভূমিকা থাকবে না, যা কার্যত একপ্রকার বৈদেশিক দখলদারি বৈধতা দেওয়ার শামিল।

২০২০ সালের আর্তসাখ যুদ্ধ এবং ২০২৩ সালের নাগোর্নো-কারাবাখ সংকটের পর আর্মেনিয়া একের পর এক ধাক্কা খাচ্ছে। এখন সিউনিক অঞ্চল যদি বিদেশি বা আজারবাইজানি নিয়ন্ত্রণে চলে যায়, তবে তা আর্মেনিয়ার জন্য আরেকটি কৌশলগত বিপর্যয় হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সিউনিকবাসী ও দেশটির জনগণ এরই মধ্যে এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তীব্র অবস্থান নিয়েছেন। তারা বলছেন, এটা শান্তি নয়, একতরফা চাপ এবং সার্বভৌম ভূখণ্ডে হস্তক্ষেপের চেষ্টা।

বিশ্লেষকদের মতে, আর্মেনিয়ার অবস্থান হওয়া উচিত স্পষ্ট ও অনড়—কোনও করিডোর নয়, কোনও আপস নয়, এবং সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনও ছাড় নয়।

১২৪ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
আন্তর্জাতিক নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন