আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গাজায় ফের ত্রাণ পাঠাচ্ছে ইসরায়েল

রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫ ৫:২১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়ে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আকাশপথে খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। পাশাপাশি অঞ্চলটিতে নির্দিষ্ট মানবিক করিডোর চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি।
দীর্ঘদিনের অবরোধে গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি চরমে উঠেছে—এমন প্রেক্ষাপটে এ সিদ্ধান্ত নিল তেলআবিব।
গত ২ মার্চ যুদ্ধবিরতি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর ইসরায়েল গাজার ওপর পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে। তবে মে মাসের শেষদিকে সীমিত আকারে কিছু ত্রাণ প্রবেশ করতে দেয়। সর্বশেষ শনিবার (২৬ জুলাই) ইসরায়েল সাতটি ত্রাণ প্যাকেজ পাঠানোর ঘোষণা দেয়। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং যুক্তরাজ্য নিজ নিজ উদ্যোগে ত্রাণ পাঠানোর কথা জানায়।
এদিকে, একই দিন গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষারত সাধারণ মানুষের ওপর ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় অন্তত ৫০ জন নিহত হন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স সংস্থা।
এছাড়া, ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’-এর সদস্যদের একটি ত্রাণবাহী নৌযান গাজার দিকে অগ্রসর হলে সেটি জব্দ করে ইসরায়েলি বাহিনী। পরবর্তীতে ‘হান্দালা’ নামের আরও একটি নৌযানে অভিযান চালায় তারা, যা সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছিল। ইসরায়েলি হস্তক্ষেপের পর সেই লাইভ ফিড বন্ধ হয়ে যায়। এর আগেও গত মাসে ‘ম্যাডেলিন’ নামের একটি নৌযানে অভিযান চালানো হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, আকাশপথে প্যারাস্যুটের মাধ্যমে গাজায় ত্রাণ ফেলা হয়েছে এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মানবিক করিডোর চালুর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সীমিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেন, “আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ অত্যন্ত ব্যয়বহুল, অকার্যকর এবং কখনও কখনও বিপজ্জনকও হতে পারে। এতে দুর্ভিক্ষ ঠেকানো সম্ভব নয়।”
ইসরায়েল যদিও দাবি করেছে, তারা গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশে বাধা দিচ্ছে না—বরং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা যথেষ্ট সহায়তা আনতে পারছে না, মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, মূল সমস্যা হলো ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কঠোর নিয়ন্ত্রণ। তারা সীমান্ত পথ এবং গাজার ভেতরের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, যা ত্রাণ সরবরাহ ব্যাহত করছে।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ এবং তীব্র চাপের মুখে গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পুনরায় চালুর এ উদ্যোগকে অনেকেই সময়োচিত মনে করলেও, বাস্তবতা কতটা বদলাবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
১০৯ বার পড়া হয়েছে