গাজায় অনাহারে মৃত্যু আরও ১০ জনের, সহায়তার অভাবে চরম মানবিক সংকট

বৃহস্পতিবার , ২৪ জুলাই, ২০২৫ ৬:২৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজা উপত্যকায় খাদ্য সংকট দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অনাহারে আরও অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অপুষ্টিজনিত কারণে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১১ জনে, যার বেশিরভাগই ঘটেছে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, চলতি বছরে অপুষ্টিতে মারা যাওয়া শিশুদের মধ্যে পাঁচ বছরের নিচে বয়স ২১ জনের। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, মার্চ থেকে মে পর্যন্ত টানা প্রায় ৮০ দিন তারা গাজায় কোনো ধরনের খাদ্য সহায়তা পৌঁছাতে পারেনি।
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আযম বলেন, “অনাহার এখন বোমার মতোই প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে। পরিবারগুলো পর্যাপ্ত খাবারের দাবি করছে না, তারা চাইছে সামান্য কিছু—বেঁচে থাকার জন্য।”
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে ৩৪ জন ছিলেন ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ।
বিশ্বজুড়ে সেভ দ্য চিলড্রেন, মেডিসিনস স্যান্স ফ্রন্টিয়ের্স (MSF) সহ ১০০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, “গাজার মানুষ এখন আশা ও হৃদয়ভঙ্গের মাঝে আটকে আছে। যুদ্ধবিরতি ও সহায়তার অপেক্ষায় দিন কাটছে তাদের। পরিস্থিতি আর সহ্যসীমার মধ্যে নেই।”
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, গাজায় সহায়তা সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। তবে তারা দাবি করছে, খাদ্যের ঘাটতি নয় বরং বিতরণ ব্যবস্থার দুর্বলতাই এই সংকটের কারণ। আইডিএফ (ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স) জানায়, বর্তমানে গাজার সীমান্তে সহায়তাসহ ৯৫০টি ট্রাক প্রস্তুত রয়েছে, কিন্তু তা যথাযথভাবে বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এর বিপরীতে জাতিসংঘ বলছে, মানবিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় গাজায় প্রতিদিন অন্তত ৬০০টি ত্রাণবাহী লরি প্রবেশের প্রয়োজন রয়েছে। বাস্তবে, দিনে মাত্র ২৮টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছে।
সংকট আরও গভীর হচ্ছে
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতি ও মানবিক করিডর না খুললে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। অনাহার, অপুষ্টি ও সহায়তার অভাব এখন গাজার বাসিন্দাদের জন্য এক নীরব কিন্তু মারাত্মক মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।
১১৮ বার পড়া হয়েছে