শিক্ষক পূর্ণিমা দাসের অনুরোধ— “ভুল তথ্য ছড়াবেন না”

বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫ ১০:১৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিষয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন স্কুলটির শিক্ষক পূর্ণিমা দাস।
বুধবার (২৩ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে শিক্ষক পূর্ণিমা দাস জানান, ঘটনার সময় তিনি স্কুলের হায়দার আলী ভবনে অবস্থান করছিলেন এবং নিজেও আগুনের মধ্যে আটকা পড়েছিলেন। তিনি বলেন, “আমি মাইলস্টোনের হায়দার আলী ভবনের একজন শিক্ষিকা। আপনাদের দুই হাত জোর করে বলছি— ভুল তথ্য ছড়াবেন না। আমিও আগুনের মধ্যে আটকা পড়েছিলাম। আমার চেয়ে বেশি আপনারা জানবেন না।”
স্কুল ছুটির সময় নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করে তিনি জানান, “স্কুল ছুটি হয় দুপুর ১টায়। আমি তখন স্কাই সেকশনে যাই, সেখানে কেবল একটি বাচ্চা দাঁড়ানো ছিল, বাকিরা চলে গিয়েছিল। তবে এরপর কয়েকজন শিক্ষার্থী আবার ক্লাসরুমে ফিরেছিল, যাদের আমরা হারিয়ে ফেলেছি। তারা কেউ দোলনায়, করিডোরে বা সিঁড়িঘরে অবস্থান করছিল।”
তিনি আরও জানান, ক্লাউড সেকশনে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বের করার চেষ্টা করছিলেন তিনজন শিক্ষক— মাহরীন মিস, মাসুকা মিস এবং মাহফুজা মিস। উদ্ধারচেষ্টার সময় মাহরীন ও মাসুকা মিস প্রাণ হারান এবং মাহফুজা মিস গুরুতর দগ্ধ হয়ে বর্তমানে লাইফ সাপোর্টে আছেন।
বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, “ক্লাউড সেকশনের পাশের ময়না কক্ষে কিছু শিক্ষার্থী আহত হলেও মৃত্যুর খবর নেই। তবে দোয়েল ক্লাসের এক শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছে। টিউবরোজ এবং ওয়াটারলিলি কক্ষে থাকা সবাই নিরাপদে রয়েছে।”
হায়দার আলী ভবনের নিচতলা ও করিডোরে থাকা শিশুদের নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করা কঠিন জানিয়ে পূর্ণিমা দাস বলেন, “অনেকের শরীর এতটাই দগ্ধ যে তাদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। ভুল তথ্য ছড়ালে বিভ্রান্তি বাড়ে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য তা আরও কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে।”
তিনি বলেন, “লাশ গুম করার মতো অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা শিক্ষক, রাজনীতিবিদ নই। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের ভালোবাসি, প্রতিটি শিশুর মরদেহ তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”
সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “অনুগ্রহ করে নিহতের সংখ্যা নিয়ে গুজব ছড়াবেন না। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে বাচ্চাদের রক্ষা করেছেন। আসুন, আমরা নিহত ও আহত শিশু এবং স্টাফদের জন্য দোয়া করি।”
১২১ বার পড়া হয়েছে