আগুনে পুড়ে গেলে দ্রুত যে প্রাথমিক চিকিৎসা নেবেন

মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫ ১:৫২ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
আগুনে পুড়ে যাওয়ার দুর্ঘটনা কখনোই হালকা নয়। এটি খুব দ্রুত জীবনকে বদলে দিতে পারে। পোড়া স্থান থেকে আসা তীব্র ব্যথা, দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন—সব মিলিয়ে এটি অত্যন্ত কষ্টদায়ক একটি অভিজ্ঞতা।
তবে সঠিক ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে পারলে এই ক্ষতি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
অনেকেই ভুল ধারণায় থাকেন যে, পোড়া জায়গায় বরফ দিলে আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, বরফ ত্বকের রক্তনালিগুলো সংকুচিত করে রক্ত চলাচল কমিয়ে দেয়, যার ফলে টিস্যুর ক্ষতি বাড়ে। যদিও বরফ ব্যথা কমায়, তবুও তা ত্বকের আসল ক্ষতি ঢাকায়, যা পরবর্তীতে সঠিক চিকিৎসায় বাঁধা দেয়। বরফ লাগানো থাকলে তা সরাতে গিয়ে ত্বক ছিঁড়ে যেতে পারে।
পোড়া স্থানে বরফ, মাখন, তেল কিংবা টুথপেস্ট লাগানো উচিত নয়। এসব উপাদান সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় এবং ক্ষতস্থানে ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। ফোসকা উঠে গেলে সেটি নিজে থেকে ফাটাবেন না, কারণ ফোসকা ক্ষতকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
প্রথমেই আগুনের উৎস থেকে দ্রুত সরতে হবে এবং শরীরে থাকা গহনা বা টাইট জামাকাপড় খুলে ফেলতে হবে, যাতে রক্ত সঞ্চালনে বাধা না পড়ে। এরপর পোড়া জায়গা প্রবাহমান ঠাণ্ডা পানিতে ১০-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে, যা ব্যথা ও উত্তাপ কমাতে সহায়তা করবে। এরপর ক্ষতস্থান সাবান ও পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার কাপড়ে শুকিয়ে নিতে হবে।
ক্ষত শুকানোর পর জীবাণুমুক্ত ও নন-স্টিক ব্যান্ডেজ দিয়ে আলতো করে ঢেকে দিতে হবে। ব্যথা থাকলে প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন খাওয়া যেতে পারে। সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক মলম ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি ফোসকা ফেটে যায়, তবে তা পরিষ্কার করে জীবাণুমুক্ত ড্রেসিং ব্যবহার করতে হবে এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আগুনে পোড়া একটি ভয়াবহ ঘটনা হলেও, সঠিক এবং সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এর প্রভাব অনেকাংশে কমানো সম্ভব। তাই গুজব ও ভুল ধারনার বদলে বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা-পরামর্শ মেনে চলাই সেরা উপায়।
১১৯ বার পড়া হয়েছে