পাহাড়ে বৈষম্যের দেয়াল তুলে লুটেছে স্বার্থান্বেষীরা: নাহিদ ইসলাম

সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫ ১:০১ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
খাগড়াছড়িতে “দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা” উপলক্ষে আয়োজিত মহাসমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, "পাহাড়ে বৈষম্যের দেয়াল তুলে একটি স্বার্থান্বেষী মহল দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ফায়দা লুটে আসছে। উন্নয়নের নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে ধান্ধাবাজি ও বিভাজন তৈরি করা হয়েছে।"
সোমবার (২১ জুলাই ২০২৫) দুপুরে পদযাত্রার অংশ হিসেবে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শাপলা চত্বর মুক্তমঞ্চে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আর কোনো বিভাজন নয়। এনসিপি বৈষম্যহীন, সম্প্রীতিপূর্ণ পাহাড় গড়তে চায়। শান্তির পাহাড়ে সম্প্রীতির বিকল্প নেই।”
তিনি আরও বলেন, "স্বৈরাচার, চাঁদাবাজ ও লুটপাটকারীরা যেন আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে লক্ষ্যে এনসিপি একটি সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে।"
সংবিধানের সংশোধনের আহ্বান
নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে আরও দাবি করেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামের বহু ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে অবাঙালি জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে বিবাদ সৃষ্টি করা হয়েছিলো।
"আমরা এমন একটি নতুন সংবিধান চাই, যেখানে সব জনগোষ্ঠী সমান মর্যাদা পাবে,"—বলেন এনসিপির আহ্বায়ক।
তিনি বলেন, বিগত ৫০ বছরে বিভাজনের রাজনীতি পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টি করেছে, আর এই সুযোগে তৃতীয় একটি পক্ষ বারবার ফায়দা লুটেছে। "এখন থেকে তৃতীয় পক্ষকে আর গেম খেলার সুযোগ দেওয়া হবে না,"—বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকেই পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব জনগোষ্ঠী উন্নয়নের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এনসিপি চায়, জাতীয় ঐক্য, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা রক্ষা করে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ।”
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ
এ মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন এনসিপির দক্ষিণ অঞ্চলের কেন্দ্রীয় সংগঠক এডভোকেট মনজিলা ঝুমা।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন—কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্য সচিব ডা. তাসনিম যারা, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি ও আব্দুল হান্নান মাসুদ।
এছাড়াও খাগড়াছড়ি জেলা এনসিপির সংগঠক বিপ্লব ত্রিপুরা, শাহ নেওয়াজ, আখলিমা আক্তার, সুবোধ চাকমাসহ জেলা ও উপজেলার শত শত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। তাদের অংশগ্রহণে সমাবেশস্থল লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। ব্যানার-ফেস্টুন আর স্লোগানে উৎসবমুখর পরিবেশে রূপ নেয় পুরো শহর।
সমাবেশ শেষে সম্প্রতি বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
১৬২ বার পড়া হয়েছে