বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার কে? এলন মাস্ক, জেফ বেজোস? নাকি অন্য কেউ

শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫ ৯:৪২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি কে—এই প্রশ্ন করলে অধিকাংশ মানুষ চোখ বন্ধ করেই বলবেন: এলন মাস্ক।
কিছুদিন আগেই যিনি ছিলেন ‘স্পেসম্যান’, ‘টেসলা বস’, আর এখন তো রাজনীতির আলোচনার মঞ্চেও একচেটিয়া দখল তার! বর্তমানে এলনের মোট সম্পদ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি ডলার। তার ঠিক পরেই আমাজনের ‘প্রাইম ম্যান’ জেফ বেজোস, যার সম্পদ ১৯ হাজার কোটি ডলার।
ফোর্বসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, তার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস, যার সম্পদ প্রায় ১৯ হাজার কোটি ডলার। তবে নানা বিতর্ক ও রাজনৈতিক জটিলতায় মাস্কের কোম্পানি টেসলার শেয়ারে বড় ধস নামায়, তার সম্পদ এক সময়ের ৪০ হাজার কোটি ডলার থেকে কমে এসেছে।
অনেক বিশ্লেষকই মনে করেন, এলন মাস্কই হবেন পৃথিবীর প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার—অর্থাৎ, যার সম্পদের পরিমাণ হবে ১ লাখ কোটি ডলার। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই খেতাব হয়তো পাবেন না মাস্ক কিংবা বেজোস, বরং হবেন এমন একজন ব্যক্তি, যাকে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ চেনেন না—সাতোশি নাকামোতো।
কে এই সাতোশি নাকামোতো?
সাতোশিই বিটকয়েনের স্রষ্টা, ডিজিটাল মুদ্রার জনক। তিনি তার নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছেন ১০ লক্ষ বিটকয়েন—একেবারে নিজের ওয়ালেটে। সেই ওয়ালেটের ঠিকানা যে কেউ দেখতে পারে, কিন্তু স্পর্শ? নাহ, সেটা সাতোশির ব্যাপার!
সাতোশি নাকামোতো নামটি প্রথম শোনা যায় ২০০৮ সালে, যখন তিনি বা তারা বিটকয়েনের ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি সম্পূর্ণ নতুন আর্থিক বিপ্লবের সূচনা করেন। ধারণা করা হয়, সাতোশি নিজের জন্য শুরুতেই ১০ লক্ষ বিটকয়েন সংরক্ষণ করে রেখেছেন একটি ডিজিটাল ওয়ালেটে, যেটি উন্মুক্ত—কিন্তু কেউ ছুঁতে পারে না।
বর্তমানে ১টি বিটকয়েনের মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ১৮ হাজার ডলার। তবে ক্রিপ্টোবিশ্বের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের গতি দেখে অনুমান করা হচ্ছে শিগগিরই একটি বিটকয়েনের দাম ১০ লক্ষ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে, সাতোশি নাকামোতোর সম্পদের পরিমাণ এক লাফে দাঁড়াবে ১ ট্রিলিয়ন ডলার—বিশ্বের ইতিহাসে এই প্রথম।
আসল পরিচয় আজও অজানা
বিটকয়েনের এই স্রষ্টার পরিচয় আজও রহস্যে ঢাকা। তিনি কি একজন একক ব্যক্তি, নাকি একটি গোপন ডেভেলপার গ্রুপ—তা কেউ জানে না। তবে অনুমান করা হয়, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের পরিচয় গোপন রেখেছেন।
বর্তমান মূল্য অনুযায়ী, সাতোশি নাকামোতো এরই মধ্যে বিশ্বের ১২তম সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি। তবে তার সম্পদ কোনো শেয়ার বাজারের উপর নির্ভরশীল নয়, বরং একেবারে ডিজিটাল এবং লিকুইড সম্পদ, যা তুলনামূলকভাবে অধিক বাস্তবসম্মত।
এখন প্রশ্ন উঠছে—যদি বিটকয়েনের মূল্য সত্যিই ১০ লক্ষ ডলার ছাড়িয়ে যায়, তবে কি ইতিহাসের প্রথম ট্রিলিয়ন ডলারের মালিক হবেন এক ‘অদৃশ্য মানুষ’? হয়তো সেই দিনই আমরা জানতে পারব সাতোশি নাকামোতোর প্রকৃত পরিচয়। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত—নামটি মনে রাখার মতোই: সাতোশি নাকামোতো।
১১৩ বার পড়া হয়েছে