নাইজেরিয়ায় দস্যুদের হামলায় নিহত অন্তত ৯, অপহরণ শতাধিক

শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫ ৭:২৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জামফারা রাজ্যে দস্যুদের বর্বর হামলায় অন্তত ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশুকে অপহরণ করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার এ ভয়াবহ হামলা চালানো হয়।
সম্প্রতি কৃষক সমাজের বিরুদ্ধে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এ ঘটনা দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই জামফারা রাজ্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এসব গোষ্ঠী বিগত কয়েক বছরে হাজার হাজার মানুষকে অপহরণ ও শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের চলাফেরা ও কৃষিকাজও অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য হামিসু ফারু বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, “এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০০ জনকে অপহরণ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। তারা এখনো ঘরে ঘরে তল্লাশি চালাচ্ছে।”
তালাতা মাফারা জেলার প্রশাসক ইয়াহায়া ইয়ারি আবুবকর ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপিকে বলেন, হামলায় ৯ জন নিহত এবং অন্তত ১৫ জন অপহৃত হয়েছেন।
জানগেবে গ্রামের এক বাসিন্দা আবু জাকি জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী প্রতিরক্ষা দলের প্রধান ও তার পাঁচ সহকর্মী আছেন। বাকি তিনজন সাধারণ গ্রামবাসী। আরেক বাসিন্দা বেল্লো আহমাদু জানান, নিরাপত্তাহীনতায় এখন কেউ আর কৃষিকাজে যেতে সাহস পাচ্ছে না।
উল্লেখযোগ্য যে, ২০২১ সালে এই জানগেবে গ্রাম থেকেই এক বোর্ডিং স্কুলের প্রায় ৩০০ ছাত্রীকে অপহরণ করেছিল একই ধরনের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। পরে মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ উসমান জানান, “হামলাকারীরা দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পুরো গ্রাম ঘিরে রাখে এবং তারপর গণহারে অপহরণ করে।” এ ঘটনার পর হাজার হাজার মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে হামলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত জামফারা রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সশস্ত্র এই গোষ্ঠীগুলোর ঘাঁটি রয়েছে একটি বিস্তৃত জঙ্গলে, যা জামফারা, কাতসিনা, কাদুনা ও নাইজার রাজ্যের সীমান্তজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। শুরুতে কৃষক ও পশুপালকদের মধ্যে ভূমি ও সম্পদ নিয়ে বিরোধ থাকলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্র পাচার এবং সংঘবদ্ধ অপরাধ এ সংকটকে আরও ভয়াবহ রূপ দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জামফারা সরকার স্বেচ্ছাসেবী ও সশস্ত্র মিলিশিয়াদের সমন্বয়ে সেনাবাহিনীকে সহায়তা করে যাচ্ছে। গত মাসে এক অভিযানে গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় একটি স্বেচ্ছাসেবী দল শিনকাফি এলাকায় এক সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে প্রায় ১০০ জনকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
১০৬ বার পড়া হয়েছে