খাগড়াছড়িতে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ : উত্তেজনা ও প্রতিবাদের ঝড়

বৃহস্পতিবার , ১৭ জুলাই, ২০২৫ ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়ায় এক ত্রিপুরা কিশোরীর উপর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই ২০২৫), এই নৃশংস ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ঘটনার বিস্তারিত
বর্ণনা অনুযায়ী, রথযাত্রা উৎসব দেখতে গিয়ে ভাইবোনছড়ার এক মেলায় যান ঐ কিশোরী। রাতের অন্ধকারে, গাড়ি না পাওয়ার কারণে তিনি তার কাকার বাড়িতে রাতযাপন করেন। সেই রাতে কিছু জড়িত ধর্ষক বাড়িতে প্রবেশ করে জোরপূর্বকভাবে তাকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। অভিযোগ, ওই ঘটনায় অংশ নেয় এক জাতীয় রাজনৈতিক দলের কিছু নেতাকর্মীও। পরে, এই ঘটনায় বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিশোরী, যা বর্তমানে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আটক ও তদন্ত
ঘটনার পরই পুলিশ ৪ আসামিকে আটক করে। তারা হলো- খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের আরমান হোসেন (৩২), ইমন হোসেন (২৫), এনায়েত হোসেন (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (৩২)। পরিবার পক্ষ থেকে মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ এই নৃশংসতা তদন্ত করছে ও অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির আশ্বাস দিয়েছে।
প্রতিবাদ ও পরিস্থিতি
ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে। খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই অপরাধের তীব্র নিন্দা জানিয়ে, ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করে। তারা বলেন, পাহাড়ে ব্যাপকভাবে বিচারহীনতার কারণে এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে।
বিএনপি নেতৃবৃন্দ, ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ও বিভিন্ন দল এই ঘটনার প্রতিবাদে অংশ নেন। তারা বলেন, ধর্ষকদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
অন্যদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ম, দল বা গোষ্ঠীর বিভাজন ভুলে সাধারণ জনগণ ও ছাত্রসমাজ একত্রিত হয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তারা আশা প্রকাশ করে, দ্রুত অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে পাহাড়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সমাজে উদ্বেগের সৃষ্টি
এই ঘটনার পর থেকে পাহাড়ে অস্থিতিশীলতা বাড়ছে বলে মনে করছে স্থানীয় জনমত। এর আগেও একই ধরনের ঘটনা ঘটলেও তা দ্রুত চাপা পড়ে বা বিচার হয় না। এর ফলে, সংশ্লিষ্ট এলাকার রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
খাগড়াছড়ির এই নৃশংস ঘটনায় দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবিতে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা ও আন্দোলন চলছে। দায়িত্বশীল প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে, সেই প্রত্যাশা স্থানীয় জনগণের।
১১০ বার পড়া হয়েছে