সারাদেশ

গোপালগঞ্জে ১৬ জুলাইয়ের দিনজুড়ে সংঘর্ষ, কারাগারে হামলা, সহিংসতা: নিহত ৪

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫ ১২:৫০ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
গোপালগঞ্জে ১৬ জুলাইয়ের দিনজুড়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা’কে কেন্দ্র করে শহরে চরম রাজনৈতিক উত্তেজনা, সমাবেশ ও সহিংসতার একাধিক ঘটনা ঘটে।

সকালে উলপুর-দুর্গাপুর সড়কে পুলিশের গাড়ি ও ইউএনওর গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ হয়, এতে চার পুলিশ সদস্য ও ইউএনও’র গাড়িচালক আহত হন। দুপুরে পৌরপার্কের প্রধান সমাবেশস্থলে হামলায় চেয়ার ও ব্যানার ভাঙচুরের পাশাপাশি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়। সংঘর্ষ ও নিরাপত্তা হুমকির মধ্যেই এনসিপি’র কেন্দ্রীয় নেতারা গোপালগঞ্জ পৌরপার্কের মঞ্চে পৌঁছান এবং উপস্থিত কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।

সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, ডা. মাহমুদা মিতু, নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের আরও উল্লেখযোগ্য নেতারা। তারা সহিংসতার নিন্দা করেন এবং শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কর্মীদের সংগঠিত রাখার আহ্বান জানান।

সমাবেশ শেষে যখন নেতা-কর্মীরা চৌরঙ্গী মোড় হয়ে বের হতে চান, তখন ফের পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের যৌথ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয় শহরজুড়ে।

বিকেল ৪টার দিকে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের মূল ফটকের ওপরে হামলা ও ভাঙচুর ঘটে; সেখানে মোটরসাইকেলে আগুন ও কারারক্ষীদের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ধ্যায় শহরজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি ও রাত ৮টা থেকে কারফিউ দেওয়া হয়।

সহিংসতার মুখে বিকেল পাঁচটার পর এনসিপির শীর্ষ নেতারা—নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, আখতার হোসেন, ডা. তাসনিম জারা, নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীসহ কেন্দ্রীয় কমিটির অন্য সদস্যরা সেনাবাহিনী এবং পুলিশের নিরাপত্তা ও সহযোগিতায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় একটি গাড়িবহরে গোপালগঞ্জ ত্যাগ করেন।

হামলা ও সংঘর্ষে অন্তত চার নিহত হয়েছেন—দীপ্ত সাহা (২৫) ও রমজান কাজী (১৮), ইমন তালুকদার এবং আরও একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি। ১০–১২ জন গুলিবিদ্ধসহ বহু আহত আছেন। শীর্ষ স্থানীয় এনসিপি নেতৃত্বের উপস্থিতি, তাদের ওপর হামলার ঝুঁকি এবং কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া ছিল সারা দিনের অন্যতম মূল ঘটনা।

সারাদিনের সহিংসতায় পুলিশ, কর্মকর্তা, আন্দোলনকারী ও পথচারী মিলিয়ে বহু আহত হয়। শহরে নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এখনো জোরদার, পরিস্থিতি গভীরভাবে সংবেদনশীল। এনসিপি নেতাদের সাহসী উপস্থিতি, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলা, সেনাসহ বিভিন্ন বাহিনীর সরাসরি হস্তক্ষেপ—গোপালগঞ্জের ১৬ জুলাইয়ের ঘটনাপ্রবাহ রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে।

১২৩ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন