ধর্ম

অভিশাপ নয়, সহনশীলতা : ইসলামের দৃষ্টিতে অভিশাপের ভয়াবহতা

ডেস্ক রিপোর্ট
ডেস্ক রিপোর্ট

বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫ ৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
আধুনিক সমাজে কথায় কথায় একে-অপরকে অভিশাপ দেওয়া যেন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি রাগের মুহূর্তে বাবা-মা পর্যন্ত সন্তানের জন্য অভিশাপ উচ্চারণ করে ফেলেন।

অথচ ইসলাম এই আচরণকে ঘৃণার চোখে দেখে এবং কঠোরভাবে নিষেধ করেছে।

শরিয়তের দৃষ্টিতে কাউকে অভিশাপ দেওয়া গর্হিত ও গুনাহের কাজ। অভিশাপ মানে কারও অমঙ্গল কামনা করা—যা একটি মুমিনের জন্য সম্পূর্ণ অনুচিত।

হাদিসে কী বলা হয়েছে?
তিরমিজি শরিফে (হাদিস: ১৯৮২) বর্ণিত, সাহাবি সামুরা ইবন জুন্দুব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন— “তোমরা একে অপরকে আল্লাহর লানত, গজব কিংবা জাহান্নামের অভিশাপ দেবে না।”

একইভাবে, আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে (তিরমিজি, হাদিস: ২০১৯) রাসুল (সা.) বলেন— “একজন পরিপূর্ণ মুমিন কখনো অধিক অভিশাপকারী হতে পারে না।”

অভিশাপের ভয়াবহ পরিণতি
সহিহ বুখারির (হাদিস: ৫৬২১) একটি হাদিসে অভিশাপকে এমনকি হত্যার সমতুল্য অপরাধ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, “যদি কেউ কোনো মুমিনকে অভিশাপ দেয়, তবে তা তাকে হত্যা করার মতোই একটি কাজ।”

এছাড়া, অভিশাপ যদি ভুলভাবে কারও ওপর দেওয়া হয়, তাহলে সেটি ফেরত এসে অভিশাপকারীর ওপরই পতিত হয়।
ইবন আব্বাস (রা.) বর্ণিত হাদিসে (বুখারি: ৫৬১৯) বলা হয়, নবীজী (সা.) একবার এক ব্যক্তিকে বাতাসকে অভিশাপ দিতে নিষেধ করেন এবং বলেন— “যদি কোনো কিছু অভিশাপের যোগ্য না হয়, তবে তা অভিশাপকারী ব্যক্তির দিকেই ফিরে যায়।”

আরেকটি হাদিসে আবুদ দারদা (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) অভিশাপের পরিণতি সম্পর্কে বলেন— “অভিশাপ আকাশে উঠলেও সেখানে গ্রহণযোগ্য না হলে তা জমিনে ফিরে আসে। জমিনও গ্রহণ না করলে, তা ডান-বাম ঘুরে, শেষ পর্যন্ত অভিশাপকারীর দিকেই ফিরে যায়।” (মেশকাত, হাদিস: ৪৮৫০)

পবিত্র কুরআনের সতর্কতা: আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন— “তোমরা যদি নিষিদ্ধ কাজের বড় বড়গুলো থেকে বিরত থাকো, তাহলে আমি তোমাদের ছোট ছোট পাপগুলো ক্ষমা করে দেবো এবং তোমাদের এক মহা-মর্যাদার স্থানে প্রবেশ করাবো।” (সুরা আন-নিসা, আয়াত: ১৭৬)


ইসলাম শান্তির ধর্ম। তাই রাগ বা প্রতিশোধপরায়ণতায় কাউকে অভিশাপ না দিয়ে ধৈর্য ও ক্ষমার পথে চলাই একজন প্রকৃত মুমিনের পরিচয়। পার্থিব ও পরকালীন সফলতা নিশ্চিত করতে অভিশাপের মতো গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।

১০৩ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
ধর্ম নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন