ক্রেডিট কার্ড নিতে কী কী লাগে? জেনে নিন শর্ত ও যোগ্যতা

মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫ ৬:২৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিল পরিশোধ, অনলাইন শপিং, বিদেশ ভ্রমণ কিংবা জরুরি খরচ—সব ক্ষেত্রেই ক্রেডিট কার্ড এখন গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক পণ্য হয়ে উঠেছে।
অনেকের জীবনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে ক্রেডিট কার্ড। তবে আপনি চাইলেই কি ক্রেডিট কার্ড নিতে পারেন? ক্রেডিট কার্ড নিতে চাইলে কিছু যোগ্যতা ও শর্ত মানতে হয়।
কারা পাবেন ক্রেডিট কার্ড?
ক্রেডিট কার্ড নিতে হলে আয় থাকতে হবে অথবা আপনার জমানো টাকা থাকতে হবে। এটাই প্রথম শর্ত। আপনার যদি আয় থাকে বা টাকা থাকে, তাহলে যেকোনো ব্যাংক আপনাকে ক্রেডিট কার্ড দেবে। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ৩০ হাজার টাকা বেতন হলেই ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে থাকে। আর ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ব্যাংকে বছরে ১০ লাখ টাকা লেনদেন হলেই কার্ড দেয়। এর বাইরে ক্রেডিট কার্ডের জন্য যোগ্য পরিবারের ওপর নির্ভরশীল শিক্ষার্থীরা ক্রেডিট কার্ড পেতে পারেন।
কীভাবে নেবেন?
এখন প্রতিটি ব্যাংক অনলাইনে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন জমা নেয়। আপনি আবেদন করলে ক্রেডিট কার্ড বিক্রয়কর্মীরা আপনার ঠিকানায় এসে কার্ডের ফরম পূরণ করে নিয়ে যাবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপনার কাছে কুরিয়ারে চলে আসবে ক্রেডিট কার্ড ও পিন। কার্ড নিতে ব্যাংকে আলাদা হিসাব খোলা বাধ্যতামূলক না। কার্ডের আবেদনে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ, যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস বিল, পুরোনো ব্যাংক স্টেটমেন্ট (সাধারণত ছয় মাসের), নমিনির পরিচয়পত্র ও ছবি এবং রেফারেন্স দিতে হবে।
ব্যাংক যাচাই করে দেখবে আপনি যথাযথ ক্রেডিট স্কোর, লেনদেন সক্ষমতা ও নিয়মিত আয়-ব্যয়ের প্রমাণ দেখাতে পারছেন কি না। এরপর আপনাকে ক্রেডিট কার্ড দেবে এবং সেই কার্ডের খরচের সীমা কত হবে, তা—ও নির্ধারণ হবে ক্রেডিট স্কোরের ওপর।
খরচের নিয়ম?
ক্রেডিট কার্ড মানে হলো, আপনি এখন খরচ করছেন, কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংককে অর্থ ফেরত দিতে হবে। না হলে গুনতে হবে চড়া সুদ। কার্ড নেওয়ার পর পিন নম্বর সেট করুন (যা ব্যাংক থেকে দেওয়া হয়)। মাসিক খরচের সর্বোচ্চ সীমা জেনে নিন এবং কত তারিখ পর্যন্ত বিনা সুদে বিল পরিশোধ করা যাবে, তা মাথায় রাখুন।
প্রতিটি ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারে এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত মাশুল কাটে। তবে ব্যাংকগুলো বছরে লেনদেনের ওপরে মাশুল মওকুফ করে দেয়। তাই মাথায় রাখতে পারেন বছরে কতটি লেনদেন অবশ্যই করবেন।
বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড?
বাংলাদেশে ১৯৯৭ সালে তৎকালীন এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংক (বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) প্রথম ক্রেডিট কার্ড সেবা নিয়ে আসে। কাছাকাছি সময়ে তৎকালীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভনিক বাংলাদেশ (এখন লংকাবাংলা ফাইন্যান্স) ও ন্যাশনাল ব্যাংক সেবাটি চালু করে। এরপর অন্যান্য ব্যাংকও এ সেবায় মনোযোগী হয়। বর্তমানে দেশে ৪০টির মতো ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবা দিচ্ছে। প্রায় সব ব্যাংকেরই রয়েছে ভিসা ও মাস্টারকার্ড ব্র্যান্ডের কার্ড সেবা। তবে এর বাইরে কয়েকটি ব্যাংক কার্ড সেবাকে অভিনবত্ব দিতে অন্য ব্র্যান্ডের কার্ডও এনেছে। যেমন সিটি ব্যাংক এমেক্স, প্রাইম ব্যাংক জেবিসি, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) ডিনার্স ক্লাব, ডাচ-বাংলা ব্যাংক নেক্সাস পে ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ইউনিয়ন পে ইন্টারন্যাশনাল কার্ড সেবা দিচ্ছে।
১১৪ বার পড়া হয়েছে