একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী সংকট, ভর্তিতে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ কোটা যুক্ত

সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫ ৫:০০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে দেশের পাঁচ শতাধিক কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী সংকট দেখা দেবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
গতবারের তুলনায় এবার মাধ্যমিক স্তরের পাস হার কম হওয়ায় একাদশে ভর্তি হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হ্রাস পেতে পারে। এ কারণে দেশের একাদশ শ্রেণির প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ আসন ফাঁকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি আবেদন আহ্বান করা হতে পারে। এ সময় প্রথমবারের মতো ভর্তিতে যুক্ত হচ্ছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ কোটা, যেখানে ওই আন্দোলনে আহত বা শহীদ পরিবারের সদস্যরা বিশেষ সুবিধা পেতে পারেন। একই সঙ্গে এবার থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের গড় পাসের হার ৬৮.০৪ শতাংশ, যা আগের বছরের ৮৩.৭৭ শতাংশের থেকে অনেক কম। ১১ শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ৪ হাজার ৮৬ জন, যার মধ্যে মাত্র ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন পাস করেছে। এর ফলে প্রায় ৬ লাখ পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশের কলেজ ও মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণির মোট আসন সংখ্যা ২৬ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি। এরমধ্যে শুধুমাত্র কলেজ-মাদ্রাসায় ভর্তি হলে ও কারিগরি বিভাগ বাদ দিলে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ আসন ফাঁকা থাকতে পারে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত প্রতি বছর এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীর অন্তত ১০ শতাংশ একাদশে ভর্তি হয় না। এ বছরও যদি এ হার বজায় থাকে, তবে খালি আসনের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
একাধিক কলেজ অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, উপজেলায় শিক্ষার্থী সংকট বেশি হলেও রাজধানীর নামকরা কলেজগুলোতে ভর্তি প্রতিযোগিতা এবারও তীব্র হবে। তবে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই মাধ্যমিকের ফলাফলের ভিত্তিতেই ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মো. রিজাউল হক জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিক সভা হয়েছে এবং শিগগিরই ভর্তি নীতিমালা জারি করা হবে। ভর্তি প্রক্রিয়ায় কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে বুয়েট।
এদিকে, নতুন খসড়া ভর্তি নীতিমালায় ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ কোটা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে সেই আন্দোলনে আহত বা নিহতদের পরিবারের জন্য সুবিধা থাকবে। অপরদিকে, দীর্ঘ সময় ধরে বিতর্কের মুখে থাকা মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবার বাতিল করার প্রস্তাব রয়েছে। কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে আসন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কমে এসেছে বলে মনে করছেন শিক্ষা প্রশাসন।
আগামী দুই থেকে তিন বছরের জন্য সাময়িক ভিত্তিতে জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য কোটা রাখা হতে পারে, পরে তা বিলুপ্ত করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
১২৬ বার পড়া হয়েছে