তারেক রহমান সমীপেষু

রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫ ৯:৪২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
জনাব তারেক সাহেব
সালাম নেবেন। ধারনা করছি এখন আমাকে স্মরন করা আর সম্ভব নয়। তবে আমাকে আপনি সহ আপনার দলের এবং আপনার প্রধান বিরোধী দলের অনেকেই চেনেন।
মনে করিয়ে দেই- আজ থেকে ২০/২২ বৎসর পূর্বে আমি বিমানে কেবিন ক্রু পদে চাকুরী রত ছিলাম। আমি কেবিন ক্রু হিসাবেই সে সময় অনেক দেশ ভ্রমণ করেছি। আমি আপনার সে সময়ের " সব" ফ্লাইটেই থাকতাম। সেই সূত্রে আপনার সাথে আমার পরিচয়। বন্ধুতা নয় অবস্যই! তবে এখানে ইন্টারেস্টিং বিষয় এই যে, যেহেতু আমি আপনার গুড বুকে ছিলাম এবং যেহেতু অনেকেই সেটি জানতেন সেহেতু তাদের সকলেরই আমার প্রতি একটু সমীহের ভাব আমি দেখেছি পরিস্কার ভাবেই।
আমাদের দেশের রাজনীতিতে এটি একটি খারাপ প্রক্রিয়া - মানছেন তো?
সেই পরিচয়, আপনার কাছে গ্রহনযোগ্যতা ছিল আমার এবং সেটি জানাজানির কারনেই এবং যেহেতু আমি আপনার দল করি না সেহেতু আমাকে আপনার দলের কয়েক জন অনুরোধ করেছিল -- আমি যেন আপনাকে একটি বিশেষ কথা বলি।
তখনই আমাকে তারা বলেন সামনেই রাজশাহীতে তৃনমুল প্রতিনিধি সম্মেলন আছে সেখানে আমি যেয়ে যেন সেই বিশেষ ম্যাসেজ টি দেই- তারা আরও বলেন আমি যেন কারো নাম না বলি এবং কথা গুলো নিজের মনোভাব হিসাবে বলি।
আমি যথারীতি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে রাজশাহী তে গমন করি। হোটেলে উঠি।
পরদিন আপনাদের সম্মেলনে যাই।
আমি তো বিএনপির সদস্যও নই, কোন কমিটিতেও নেই, তবুও ভেতরে যেতে কোনই অসুবিধা হয় নাই,কেন তেমন হলো সেটি বুঝে নেবেন। তারাই মানে সেই নেতারাই আমাকে " তারেক রহমানের অতিথি " লেখা কার্ডটি বুকে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন।
যে রকম হয় সেরকমই লাঞ্চের পরে আপনি মাঠে এলেন ও আমাকে দেখেই কাছে ডেকে নিলেন।
আমরা মাঠে হাটছিলাম, সিগারেট খাচ্ছিলাম ও কথা বলছিলাম। আপনি আমার ব্যক্তিগত কথা জিজ্ঞেস করছিলেন এবং পরিশেষে বললেন--
" আমার তো স্টেজে যেতে হবে, আপনি কি আমাকে কিছু বলবেন"?
আমি আপনাকে জবাব দিলাম-- জী একটা কথা বলার ছিল "।
আমি আপনার সম্মতি সাপেক্ষে যে কথা বলার জন্য রাজশাহী এসেছি সেই কথা বলা শুরু করলাম--
" দেখুন আমি আপনাকে বলতে চাই - আপনার দলের কি দরকার জামাতের সাথে এতো নির্ভরতা সৃষ্টি করার। বরঞ্চ আপনার দল নিয়ে আপনি যদি সদস্য সৃষ্টির কাজ করেন তবে আখেরে আপনারা লাভবান হবেন। স্যার আপনাকে আমি মনে করিয়ে দেই, এই জামাত কিন্তু একদিন আপনাদের সাথে বেঈমানী করবে। "
আপনি আমার পুরো কথা মনোযোগ দিয়েই শুনলেন কিন্তু আমার যেন মনে হল আপনি আমার কথা পছন্দ করলেন না। আমার বেশ মনে আছে।
আজ দুদিন থেকেই আমার সেই ২২/ ২৩ বৎসর আগের বলা কথা বার বার মনে পরছে।
আজ কি হল স্যার। আপনার নামে এমন সব শ্লোগান তুললো তারা যে সুস্থ রাজনীতির দেখা শোনা বা প্রত্যাশা করা সকলেই চমকে উঠেছে!
স্যার আমার সেই ভবিষ্যৎবানী কি আজ সত্যি হল??
আমার কথা শুনতে হবে এমন কোন কথা নেই। আমি আপনার দলও করি না। এগুলো আপনার বিষয়।
আপনাকেই ঠিক করতে হবে আপনি কি করবেন? আপনি ঠিক কি কারনে প্রধান উপদেষ্টার সাথে লন্ডনে বসেছিলেন তা কেউ জানে না। আমিও না তবে কি আপনার সেই মিটিং ই আজ আপনার বিপত্তি বাড়ালো?
আমার তো এমনি মনে হচ্ছে।
আপনার বুদ্ধি দাতারা কি কেবল হুজুর হুজুর করেন। তা হলে তাদের বাদ দিতে হবে বা সতরক হতে হবে। ঢাকার নেতাদের আপনি নাকি বিশ্বাস করেন না - শুনেছি, তাহলে কি করবেন?
আপনি কি এই নেতাদের আবারো ঐক্যমত্য নামক মিটিং এ যেতে দেবেন?
না করে দেখুন আবার ভোল পাল্টাবে জামাত! আবারো বন্ধু সাজবে তারা। কেন??
সেটি তো বুঝেন! কেননা পেছন থেকে গুটি চালাচ্ছে তারাই।
তারেক রহমান সাহেব আপনাকে বলি -- আর মিটিংয়ে যাওয়ার বিষয়ে না করুন, আপনার দল যাতে রাজপথে নামে সে বিষয়ে ভাবুন, আপনার দলের দিকে তাকান, দলে জামাত বড় বড় পোস্ট নিয়ে বসে আছে ( টাকার বিনিময়ে), তারা বেড়িয়ে যাচ্ছে - ফলে দূর্বল হচ্ছেন। আজ বাংলাদেশে আপনার কতগুলি অফিস ভাংলো তারা হিসাব করুন। ভেরী ব্যাড। বিষয়টি আপনাদের শক্তি ক্ষয়ের নমুনা। হাজার হাজার কর্মী বহিস্কৃত করে কি হবে বা হলো। বরঞ্চ এদের বিজি করেন। প্রাসাদ রাজনীতির ফলাফল তো পেলেন স্যার। রাস্তার রাজনীতি করুন। উতখ্যাত করতে সচেষ্ট হন।
মনে রাখুন এদের না তাড়াতে পারলে এরা বিদায় হবেই না। আর ভোট? মেটিকুলাস পদ্ধতিতেই হবে।
জনাব দয়া করে আপনার পাবলিক ভোটের বিষয়ে ভাবুন। নিরিখ করলেই হ্রাস পাবার রেটটা পাবেন।
আপনি কি এ সময়ে চিন্তিত? আমি মনে করি তাই!
রাজপথের সাথী খুঁজতে পারেন।
আপনি কিছু মনে নেবেন না। আপনার যথাযথ সম্মান রেখেই লিখলাম।
এছাড়া তো অন্য কোন পথ ছিল না আপনাকে স্মরন করাবার।
ভুলত্রুটি মনে নেবেন না কিছু। সালাম।
লেখক: স্যোশাল অ্যাকটিভিস্ট ও রাজনৈতিক কর্মী।
২৩২ বার পড়া হয়েছে