ফরিদপুরে রাজন হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

বৃহস্পতিবার , ১০ জুলাই, ২০২৫ ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ফরিদপুরের মধুখালীতে ২০১৪ সালে ঘটে যাওয়া রাজন হত্যা মামলায় দীর্ঘ ১১ বছর পর পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
পাশাপাশি প্রমাণ গোপনের অভিযোগে তাদের আরও ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক অশোক কুমার দত্ত এই রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পাঁচজন হলেন:
মো. আরমান হোসেন
মির্জা মাজহারুল ইসলাম মিলন
মো. মামুন শেখ
ইলিয়াছ মৃধা
আছাদ শেখ (পলাতক)
রায়ের সময় প্রথম চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের পুলিশ পাহারায় কারাগারে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে, মামলার অপর দুই আসামি মো. হাসান সিকদার ও মো. আশরাফুল শিকদারকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ মধুখালীর বাসিন্দা শাহ মো. রাজন (২৮) বিকেলে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন, এরপর আর ফিরে আসেননি। চারদিন পর জেলেরা রাজনের মোটরসাইকেলটি মধুমতী নদীতে খুঁজে পায়।
পরবর্তীতে পুলিশের অনুসন্ধানে রাজনের মোবাইল ফোন মামুন শেখের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। কললিস্টের সূত্র ধরে আরমান হোসেনকে আটক করে পুলিশ।
আরমান জিজ্ঞাসাবাদে রাজনকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে কৌশলে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ বাগানে পুঁতে রাখার কথা স্বীকার করেন। রাজনের লাশ পরে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, রাজনের হত্যাকাণ্ডের পর মির্জা মাজহারুল ইসলাম মিলনসহ অন্যান্য আসামিরা ময়নাতদন্তে বাধা দেওয়া ও মামলার প্রমাণ নষ্টের চেষ্টা করেন। এসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে।
নিহতের মা জোৎস্না বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর রকিবুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন,
“এই মামলায় পরিকল্পিত হত্যার যথাযথ বিচার হয়েছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হয়েছে।”
এই ঘটনাটি মধুখালী তথা ফরিদপুরে দীর্ঘদিন আলোচিত ছিল। শেষপর্যন্ত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আদালতের এই রায় নিহত রাজনের পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়েছে।
১২৪ বার পড়া হয়েছে