সর্বশেষ

সারাদেশ

ভরা মৌসুমেও ইলিশ মিলছে না নদীতে 

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ঝালকাঠি প্রতিনিধি

বৃহস্পতিবার , ১০ জুলাই, ২০২৫ ৭:৫২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
ভরা মৌসুমেও ইলিশশূন্য হয়ে পড়েছে উপকূলীয় ঝালকাঠির বিষখালী নদী। নদীতে মাছ না থাকায় দিনরাত জাল ফেলে হতাশ হয়ে ফিরছেন জেলেরা।

বিকল্প আয়ের উৎস না থাকায় উপজেলার কয়েকশো জেলেপরিবার এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে।

মৎস্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় কাঁঠালিয়া উপজেলার বিষখালী নদী ছিল ইলিশ আহরণের অন্যতম অভয়ারণ্য। এই নদীর তীরবর্তী অন্তত ১২টি গ্রামের মানুষ মাছ শিকারকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। বর্তমানে উপজেলায় প্রায় দুই হাজার জেলে পরিবার ইলিশ আহরণে নির্ভরশীল। তাদের অনেকেই এনজিও, ব্যাংক ও মহাজনের কাছ থেকে ঋণ ও উচ্চ সুদের দাদনে জাল-নৌকা কিনে নদীতে নামলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।

কাঁঠালিয়া সদর, আমুয়া বন্দর, কচুয়া, সেন্টারের হাট ও আওরাবুনিয়া বাজারে ইলিশের সরবরাহ অতি নগণ্য। কোনো কোনো দিন একজন-দুজন জেলের জালে দু-একটি ইলিশ ধরা পড়লেও সেগুলোর দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা দরে।

জেলে ফারুক হোসেন বলেন, “নদীতে এখন আর আগের মতো ইলিশ নেই। বাপ-দাদার পেশা ছাড়তেও পারছি না। অথচ সংসার চলছে না।”

তার ভাই সেন্টু বলেন, “কয়েক বছর মাছ না পাওয়ায় সংসারে তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। বাধ্য হয়ে মাছ ধরা ছেড়ে এখন থানার সামনে চায়ের দোকান দিচ্ছি।”

বাজারে চাহিদা থাকলেও সরবরাহ না থাকায় মাছ ব্যবসায়ীরাও বিপাকে। আমুয়া বাজারের মাছ ব্যবসায়ী নুরু সরদার বলেন, “বিষখালীর পানিতে ইলিশের স্বাদ অন্যরকম। তাই এ নদীর মাছের দাম বেশি। কিন্তু এখন তো মাছই মিলছে না।”

অন্যদিকে সাধারণ ক্রেতারাও মাছের দামের কারণে নিরুৎসাহিত। বেসরকারি সংস্থা ব্যুরো বাংলাদেশ’র কাঁঠালিয়া শাখার ব্যবস্থাপক মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, “ছোট চাকরি করে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজারে এত চড়া দামে ইলিশ কেনা সম্ভব নয়।”

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ইলিশের প্রজনন ও চলাচলের রুটে পরিবর্তন এসেছে। তবে আশাবাদী, আগামীর আমাবস্যা ও গোনের সময় থেকে নদীতে কিছুটা ইলিশ ধরা পড়বে।”

জেলেরা বলছেন, বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত না করা হলে তারা টিকে থাকতে পারবেন না। সংশ্লিষ্টদের দাবি, জেলেপরিবারগুলোর জন্য সহায়তা ও প্রশিক্ষণসহ টেকসই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা এখন সময়ের দাবি।

১২০ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন