লোহিত সাগরে হুথি হামলায় কার্গো জাহাজ ডুবে নিহত ৪, নিখোঁজ ১৫

বৃহস্পতিবার , ১০ জুলাই, ২০২৫ ৪:৩৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
লোহিত সাগরে হুথি বিদ্রোহীদের হামলায় ‘এটারনিটি সি’ নামের একটি কার্গো জাহাজ ডুবে গেছে। এতে অন্তত চারজন নাবিক নিহত হয়েছেন এবং এখনও ১৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর ‘অপারেশন অ্যাস্পিডিস’ অভিযানের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী ও গ্রিসের মালিকানাধীন জাহাজটি সোমবার হুথি বিদ্রোহীদের ছোড়া একাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়। হামলার দু’দিন পর, বুধবার, জাহাজটি পুরোপুরি ডুবে যায়। রয়টার্স ও এএফপি খবরটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, ‘এটারনিটি সি’ সুয়েজ খালের দিকে যাত্রারত অবস্থায় ছিল। হুথি বিদ্রোহীরা হামলার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে বিস্ফোরণ এবং জাহাজে আগুন লাগার দৃশ্য দেখা যায়।
হুথি বিদ্রোহীরা দাবি করেছে, জাহাজটি ইসরায়েলের দিকে যাচ্ছিল। গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় তারা এ হামলা চালিয়েছে বলে জানানো হয়। হুথিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানান, জাহাজের কয়েকজন নাবিককে তারা উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েমেন মিশনের দাবি ভিন্ন। তারা অভিযোগ করেছে, হুথিরা অনেক বেঁচে যাওয়া নাবিককে অপহরণ করেছে এবং তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানায়।
ইইউ পরিচালিত সামরিক অভিযান সূত্রে জানানো হয়, ২২ জন ক্রু এবং তিনজন নিরাপত্তাকর্মীর মধ্যে ছয়জন—যাদের মধ্যে পাঁচজন ফিলিপাইনের ও একজন ভারতীয় নাগরিক—কে উদ্ধার করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক শিপিং সংস্থাগুলোর জোট, যার মধ্যে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং ও বিআইএমসিও, এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, “এই হামলা নিরপরাধ নাবিকদের জীবনের প্রতি চরম অবজ্ঞার নিদর্শন। লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।”
এই হামলাকে হুথিদের সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর ঠিক একদিন আগেই তারা ‘ম্যাজিক সিজ’ নামের আরেকটি কার্গো জাহাজে হামলা চালিয়ে সেটিও ডুবিয়ে দেয়। তবে সে ঘটনায় সব নাবিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে হুথিরা শতাধিক বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে দুটি জাহাজ ডুবে যায় এবং একটি জাহাজ এখনো তাদের দখলে রয়েছে। এসব ঘটনায় অন্তত চারজন নাবিক নিহত হয়েছেন।
২০২৫ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও হুথিদের মধ্যে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা বন্ধে একটি সমঝোতা হলেও, হুথিরা ঘোষণা দিয়েছে তারা ইসরায়েল-সংশ্লিষ্ট জাহাজের ওপর হামলা অব্যাহত রাখবে।
এদিকে, একই দিনে ইসরায়েল পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত তিনটি বন্দর ও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিমান হামলা চালায়। এর জবাবে হুথিরাও ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
১৩৩ বার পড়া হয়েছে