সর্বশেষ

সারাদেশ

লক্ষ্মীপুরে এক বছরে পানিতে ডুবে ১২৫ শিশুর মৃত্যু

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫ ৭:০৪ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
গত এক বছরে লক্ষ্মীপুর জেলায় পানিতে ডুবে অন্তত ১২৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শিশুর এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি, ৪০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে রায়পুরে ২০, রামগঞ্জ ও কমলনগরে প্রতিটি জায়গায় ২৮ জন করে এবং রামগতি উপজেলায় ৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

এই তথ্য জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা গেছে। তারা জানান, পানিতে ডুবে নিহত শিশুর বয়স সাধারণত দুই থেকে আট বছরের মধ্যে। স্থানীয়দের অভিমত, শিশুদের অভাবমুখী সচেতনতা, সাঁতার না জানা, এবং জলাশয়গুলো অরক্ষিত থাকায় এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে এবং নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন বলেন, “পুকুর, খাল ও বিলের মতো জলাশয়বহুল এ জেলায় শিশুমৃত্যুর হার অন্যান্য জেলার তুলনায় বেশি। এসব ঘটনা আমাদের গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। অধিকাংশ শিশু মৃত্যুর পেছনে রয়েছে অভিভাবকদের অবহেলা ও সচেতনতার অভাব।”

তাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বর্ষা মৌসুমে সবচেয়ে বেশি পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু ঘটে। কারণ, এই সময়ে পুকুর-খাল-মাঠজুড়ে জলস্তর বেড়ে যায় এবং শিশুদের জন্য বিপদ বাড়ে। চলতি বছরের জুন মাসেই জেলায় ২১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে।

জেলা শিশু একাডেমির তথ্য অনুযায়ী, লক্ষ্মীপুরে ৮ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের প্রায় ৯০ শতাংশই সাঁতার জানে না। এছাড়া পানিতে ডুবে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারার জ্ঞানও অনেকের নেই। ফলে অনেক সময় শিশুকে উদ্ধার করেও হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই প্রাণ হারাতে হয়।

শিশু একাডেমির শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা মো. কাউছার আহমেদ জানান, পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার কমাতে শিশুদের সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ চলছে। ‘পদক্ষেপ’ নামের একটি এনজিওর সহযোগিতায় এই বছর ১৩ হাজার শিশুকে সাঁতার শেখানোর পরিকল্পনা নিয়েছে তারা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে গত দশ বছরে পানিতে ডুবে ২৫ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশেও প্রতিবছর ১৪ হাজারের বেশি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়, যা ৫ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ।

জাতিসংঘ ও ইউনিসেফের গবেষণায় বলা হয়েছে, শিশুদের সাঁতার শেখানো, জলাশয়গুলো ঘিরে বেড়া দেওয়া, নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি এবং জনসচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে এই ধরনের দুর্ঘটনা অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

১২৪ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন