সাংবাদিক হামলার সাত দিন পরও গ্রেপ্তার হয়নি মূল আসামিরা

সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫ ৫:৫৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের ওপর সংঘঠিত সন্ত্রাসী হামলার সাত দিন অতিক্রম করলেও এখনো গ্রেপ্তার হয়নি মামলার মূল অভিযুক্তরা।
হামলার ভিডিও ফুটেজ, স্থিরচিত্র এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের স্পষ্ট সাক্ষ্য থাকার পরও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
গত ৩০ জুন (সোমবার) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব চত্বরে ক্লাবের অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও নেতৃত্ব সংকটকে কেন্দ্র করে প্রেসক্লাব সভাপতি আবুল কাশেম ও তার সঙ্গে থাকা সাংবাদিকদের ওপর প্রকাশ্যে হামলা চালানো হয়। এতে প্রায় ৩০ জন সাংবাদিক আহত হন। ঘটনার পরপরই প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয় আবু নাসের মো. আবু সাঈদকে। তার সঙ্গে অভিযুক্ত হিসেবে রয়েছেন আল ইমরান, অমিত ঘোষ বাপ্পা এবং শাকিলা ইসলাম জুঁই। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তারা লোহার রড ও লাঠিসোটা দিয়ে সরাসরি হামলায় অংশ নেয়। অভিযুক্তদের মধ্যে শাকিলা ইসলাম জুঁই জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হলেও, হামলার সময় তার হাতে লোহার রডসহ উপস্থিত থাকার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আল ইমরান ও অমিত ঘোষের বিরুদ্ধে মাদক, প্রতারণা এবং ভাড়াটে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আগে থেকেই রয়েছে।
হামলার ঠিক পরদিন, প্রধান আসামি আবু সাঈদ উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন, যাতে জেলার ৩৭ জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়। সাংবাদিকরা এই মামলা সম্পর্কে বলেন, “এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানিমূলক পদক্ষেপ, যার উদ্দেশ্য প্রকৃত অপরাধীদের রক্ষা করা এবং তদন্তকে বিভ্রান্ত করা।”
প্রেসক্লাব সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, “প্রমাণ থাকার পরও সাত দিন পেরিয়ে গেলেও আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চরম ব্যর্থতা। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
সাংবাদিকদের অভিযোগ, মামলার আসামিরা প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন জায়গায় এবং কখনো থানার সামনেও প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে, কিন্তু প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
সাতক্ষীরার সাংবাদিক সমাজ এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, “আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার না করা হলে আমরা আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি রাজপথে নামতে বাধ্য হবো।” তাঁরা সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে কঠোর প্রশাসনিক পদক্ষেপ দাবি করেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামিনুল হক জানান, “ঘটনাস্থল থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।” তবে থানার সামনে আসামিদের ঘোরাফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, “বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তা দেখবেন।”
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, “আসামিদের গ্রেপ্তারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। থানার সামনে তাদের অবস্থানের ব্যাপারে কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। বিষয়টি যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
১২৪ বার পড়া হয়েছে