নড়াইলের আলোচিত ডাকাতির মূলহোতা তুষার শেখ ও তার স্ত্রী আটক

সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫ ৫:৪১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নড়াইলের লোহাগড়ায় সংঘটিত দুটি ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের প্রধান তুষার শেখ ওরফে গোল্ড হৃদয়কে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ।
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া বেগম ওরফে জান্নাতকেও।
রোববার (৬ জুলাই) রাত ৮টার দিকে লোহাগড়া থানা প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ ও লোহাগড়া থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ভোরে ঢাকার আজমপুর এলাকা থেকে তুষার শেখকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে লোহাগড়ার নোয়াগ্রাম এলাকার নিজ বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকারসহ তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তুষার শেখ নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামের ওয়াদুদ শেখের ছেলে এবং রোকেয়া বেগম খাগড়াছড়ির ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা নূর মাঝির মেয়ে।
ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি রাতে লোহাগড়া উপজেলার ঘাঘা গ্রামে প্রবাসী বাবলু শেখের বাড়িতে অস্ত্রধারী ডাকাতদল হানা দেয়। তারা প্রবাসীর স্ত্রী শেফালী বেগমকে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল লুট করে নেয়। এর চারদিন পর, একই উপজেলার নোয়াগ্রামে অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবুল হাসান বিশ্বাসের বাড়িতে ফের ডাকাতির ঘটনা ঘটে। নতুন বিয়ের পর মেয়ের জামাইসহ পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে ডাকাতদল আরও একটি বড় অঙ্কের লুট করে।
দুটি মামলার তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ ডাকাত দলের প্রধান তুষার শেখের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হয়। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তুষার শেখ ডাকাতির পরিকল্পনা ও ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তুষার শেখ জানান, আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে তার পরিচয় হয় এক নারী, আসমা বেগমের সঙ্গে। তিনি ‘ভাবি’ পরিচয়ে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন এবং কয়েকটি বাড়ির তথ্য দেন। পরে তুষার সেই তথ্যের ভিত্তিতে প্রবাসী বাবলু শেখ ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আবুল হাসানের বাড়িতে ডাকাতির পরিকল্পনা করে।
ঘাঘা গ্রামে বাবলু শেখের বাড়িতে পাঁচুড়িয়া থেকে জাকির, ওয়াদুদসহ আরও কয়েকজন নিয়ে ডাকাতি চালানো হয়। একইভাবে, নোয়াগ্রামে সেনাসদস্যের বাড়িতে আসমার দেওয়া তথ্য অনুসারে গ্রিল কেটে প্রবেশ করে তারা লুট চালায়। ডাকাতির পর স্বর্ণালংকার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয় এবং আসমা বেগমকেও দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা।
তুষার জানান, “প্রতিটি ডাকাতির পর লুণ্ঠিত মালামালের ভাগ সবাইকে দিয়েছি। এরপর আর কোনো ডাকাতিতে অংশ নেই।”
সংবাদ সম্মেলনে ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, তুষার শেখের দেওয়া তথ্যমতে ডাকাত দলের বাকি সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে সব কিছু এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না। লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের চেষ্টাও চলছে।
১২১ বার পড়া হয়েছে