গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ৭০০’র বেশি ফিলিস্তিনি

রবিবার, ৬ জুলাই, ২০২৫ ৮:১৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজার বিভিন্ন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন শত শত ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৭০০’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত বিতর্কিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে সহায়তা নিতে গিয়ে অন্তত ৭৪৩ জন নিহত এবং ৪ হাজার ৮৯১ জন আহত হয়েছেন।
জিএইচএফ গত মে মাসে গাজায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে। তবে সংস্থাটি শুরু থেকেই বিতর্ক ও সমালোচনার মুখে পড়ে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের নিয়োজিত নিরাপত্তাকর্মীরা এবং ইসরায়েলি সেনারা সাহায্যপ্রার্থীদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি ও স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করছে।
আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ জানান, আসল হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। তিনি বলেন, “ক্ষুধার্ত মানুষগুলো খাবারের প্যাকেটের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে। অনেকেই সাহায্য পেতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছে। মায়েরা সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে নিজেরা অনাহারে থাকছেন।”
এপির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দুইজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন ঠিকাদারের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, জিএইচএফ বিতরণ কেন্দ্রে সশস্ত্র কর্মীরা ইচ্ছামতো গুলি চালাচ্ছেন এবং সাধারণ মানুষের ওপর স্টান গ্রেনেড ছুড়ছেন।
যদিও জিএইচএফ এসব অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে দাবি করেছে, তারা তাদের কার্যক্রমে নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।
এমনকি মার্কিন প্রশাসনও জিএইচএফের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “গাজায় সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে জিএইচএফই একমাত্র সফল সংস্থা।” জুনের শেষে ট্রাম্প প্রশাসন জিএইচএফকে ৩০ মিলিয়ন ডলার সরাসরি তহবিল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
শনিবার (৫ জুলাই) জিএইচএফ জানায়, গাজার খান ইউনিসে একটি বিতরণ কেন্দ্র থেকে সহায়তা শেষ করে বের হওয়ার সময় গ্রেনেড হামলায় তাদের দুই মার্কিন কর্মী আহত হয়েছেন। সংস্থাটি জানিয়েছে, আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল।
এদিকে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ একাধিক মানবাধিকার সংগঠন জিএইচএফের কার্যক্রমকে ‘অমানবিক’ ও ‘প্রাণঘাতী সশস্ত্র পরিকল্পনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রকল্পটি অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই সংস্থা প্রতিনিয়ত ২০ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনিকে অতিরিক্ত ভিড় এবং সশস্ত্র সহিংসতার মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
১৩৩ বার পড়া হয়েছে