সর্বশেষ

জাতীয়

সিডরো’র উন্নয়ন কার্যক্রম: মানবিক উন্নয়নের একটি আলোক ধারা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫ ৫:৫৬ অপরাহ্ন

শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সোশ্যাল এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ অর্গানাইজেশন (সিডরো) ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে।

প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক খাজা মাসুম বিল্লাহ কাওছারীর নেতৃত্বে সংগঠনটি ধীরে ধীরে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার গণ্ডি পেরিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং মানবিক উন্নয়নের সুসংগঠিত উদ্যোগে পরিণত হয়েছে।

“১দিন মানবকল্যাণে”—একটি ব্যতিক্রমী মানবিক উদ্যোগ: সিডরো’র সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি হচ্ছে “১দিন মানবকল্যাণে”, যার লক্ষ্য হলো— বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে অন্তত একদিন নিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে ব্যয় করবে। শিক্ষক, চিকিৎসক, ব্যাংকার, ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থী পর্যন্ত সবাই এই অভিযাত্রায় যুক্ত হতে পারেন। এই একদিনের মাধ্যমে কেউ শিক্ষা দিতে পারেন, কেউ চিকিৎসা সেবা, আবার কেউ মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে পারেন অসহায় মানুষের কাছে।

সিডরো স্কুল অ্যান্ড কলেজ:
সিডরো’র শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত সিডরো স্কুল অ্যান্ড কলেজ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য একটি মানবিক শিক্ষার আদর্শ উদাহরণ। এখানে শুধু বইয়ের পড়া নয়, বরং শিশুদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং নেতৃত্বগুণে গড়ে তোলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

প্রধান লক্ষ্যসমূহ:
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিনামূল্যে বা স্বল্প খরচে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা, একজন শিক্ষার্থী, একজন সমাজসেবক” মূলমন্ত্রে নেতৃত্ব বিকাশ।

অর্থায়ন ও সহায়তা কাঠামো: সিডরো “একজনের একদিন” মডেল অনুসরণ করে, যার মাধ্যমে সমাজের সামর্থ্যবান মানুষ, পেশাজীবী, শিক্ষক-চিকিৎসকসহ সবাই বছরে অন্তত একদিন তাদের সময়, শ্রম বা সামর্থ্য মানবিক কাজের জন্য উৎসর্গ করেন। এছাড়া, দাতা সংস্থা, এনজিও, ওয়াকফ ফাউন্ডেশন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানভিত্তিক মানবিক তহবিল এবং অভিভাবকদের স্বেচ্ছাসহযোগিতায় সিডরোর প্রকল্পসমূহ পরিচালিত হয়।

পরিবেশ ও পরিকাঠামো: সিডরো সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে খোলা, নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন ও শিশুবান্ধব শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করে। বস্তি এলাকা, মাদ্রাসার মাঠ, মসজিদের কোণ বা খালি জমিতে স্কুল চালু করা হচ্ছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই স্কুল সাজানোর কাজে অংশ নিচ্ছে। একজন চেয়ারম্যান ও জেনারেল সেক্রেটারি/প্রিন্সিপালের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের পরিচালনা পরিষদ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। সিডরো’র নির্দিষ্ট নিয়মনীতি ও সার্ভিস রুল অনুসারে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়।

সিডরো মানবতার কল্যাণকে ধর্মীয় দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করে। পবিত্র কুরআনের নির্দেশনা এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মানবিক শিক্ষাই এই সংগঠনের প্রধান চালিকাশক্তি।

সিডরো’র কার্যক্রম আজ আর শুধু শিক্ষা বা স্বাস্থ্য উন্নয়নে সীমাবদ্ধ নয়; এটি বাংলাদেশের মানবিক মূল্যবোধের জাগরণে এক নতুন আলোকবর্তিকা। “১দিন মানবকল্যাণে” কর্মসূচির মাধ্যমে সিডরো প্রমাণ করছে—সমাজের প্রতিটি মানুষ যদি বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে মাত্র একদিন মানবতার জন্য কাজ করে, তবে গোটা সমাজ বদলে যেতে পারে। সিডরো তাই শুধু একটি উন্নয়ন সংস্থা নয়, এটি একটি মানবিক আন্দোলনের নাম।

সিডরো—শুধু শিক্ষা নয়, মানবিকতার বিকাশ।

১২৩ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন