সর্বশেষ

জাতীয়

৬ মাসে সড়কে ১৭ হাজার ৯৫৭টি দুর্ঘটনা, নিহত ২৭৭৮ : সেভ দ্য রোড

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫ ১০:২৩ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের সড়কপথে চরম বিশৃঙ্খলা ও আইন না মানার প্রবণতায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৭ হাজার ৯৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৭ হাজার ৮২৬ জন এবং প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৭৭৮ জন। স্বেচ্ছাসেবি, গবেষণা ও সচেতনতামূলক সংগঠন সেভ দ্য রোড এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পদ্মা সেতুসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বাইক লেন না থাকা, রাইড শেয়ারিং সেবার বেপরোয়া ব্যবহার, লাইসেন্সবিহীন উচ্চগতির মোটরসাইকেল চালনা এবং অনুমোদনবিহীন প্রায় আড়াই লাখ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার বিশৃঙ্খল চলাচলের কারণে দুর্ঘটনার হার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

শুধুমাত্র ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, সিএনজি ও থ্রি-হুইলার বাহনে দুর্ঘটনার সংখ্যা ৮ হাজার ৮১২টি। এতে আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৮১৫ জন এবং নিহত হয়েছেন ৭৯৫ জন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৭১৪টি, যাতে আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৬২৩ জন এবং নিহত ৬৭৩ জন। বাস দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩ হাজার ৪০৪টি, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৮২৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৩১৮ জন। ট্রাক, পিকআপ ও লড়ি দুর্ঘটনার সংখ্যা ২ হাজার ২৭টি, যাতে নিহত হয়েছেন ৪৮৫ জন এবং আহত ২ হাজার ৭০ জন।

প্রতিবেদনটি তৈরি করতে দেশের ১৭টি জাতীয় দৈনিক, ২০টি টিভি চ্যানেল, ২২টি অনলাইন পোর্টাল ও সেভ দ্য রোড-এর মাঠপর্যায়ের স্বেচ্ছাসেবীদের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে।

এছাড়া গত ছয় মাসে সড়কপথে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ১১৮টি, যেখানে ডাকাতদের হামলায় আহত হয়েছেন ১০৪ জন। একই সময়ে সড়কে নারী শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে ৬১৪টি এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২টি। অধিকাংশ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানা-পুলিশের স্মরণাপন্ন হননি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।


নৌপথে কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশের দায়িত্বে গাফিলতির সুযোগে ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে। এসময় নৌপথে ৬১৫টি দুর্ঘটনায় ৪৫১ জন আহত ও ১৪ জন নিহত হন। রেলপথে ৫২৬টি দুর্ঘটনায় ১৮৪ জন আহত ও ১৪ জন প্রাণ হারান। অপরদিকে, রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় দুষ্কৃতিকারীদের ছোড়া ইট-পাটকেল ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৫৩ জন আহত হন। যদিও আকাশপথে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি, তবে বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার কারণে অসুস্থ হয়েছেন ৩১৬ জন যাত্রী।

সেভ দ্য রোড-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের শুরু থেকেই সড়কে নৈরাজ্য বেড়েছে, যা সরকারের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতিবাজ আমলা এবং শ্রমিক নেতাদের দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির কারণে আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন এবং লাইসেন্সহীন চালকের দৌরাত্ম্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে আকাশ, সড়ক, রেল ও নৌপথকে দুর্ঘটনামুক্ত করতে সাত দফা দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—মিরসরাই ট্রাজেডির স্মরণে ১১ জুলাইকে ‘দুর্ঘটনামুক্ত পথ দিবস’ ঘোষণা, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখা, অযোগ্য চালক-সহযোগী নিয়োগ বন্ধ, দুর্ঘটনায় নিহতদের ১০ লাখ ও আহতদের ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, ‘ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স রুল’ বাস্তবায়ন ও ট্রান্সপোর্ট পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠন, দুর্ঘটনার তদন্ত ও বিচার দ্রুত সম্পন্ন এবং দূর্নীতি প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুর্ঘটনামুক্ত পথ গড়তে মালিক-শ্রমিক, প্রশাসন ও জনগণের মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই। একইসঙ্গে সরকারি সহায়তা পেলে সমাজসচেতনতা, গবেষণা ও স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে বলে আশা প্রকাশ করে সেভ দ্য রোড।

১২০ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন