সিরিজে টিকে থাকতে আজ ‘অলআউট’ ক্রিকেটের লক্ষ্যে বাংলাদেশ

শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫ ৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে হেরে এখন ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। প্রেমাদাসায় দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের প্রেক্ষিতে আশার পাশাপাশি শঙ্কাও ভর করছে টাইগার শিবিরে।
প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২৪৪ রানে বেঁধে রাখলেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় জয় হাতছাড়া হয়েছে। এ নিয়ে টানা সাত ম্যাচে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেল বাংলাদেশ। শেষ জয়টি এসেছিল গত বছরের নভেম্বরে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
সেই পরাজয়ের পর থেকেই বিশ্বকাপ র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান অবনতির দিকে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি অংশগ্রহণের পথও কঠিন হয়ে পড়বে।
এমন পরিস্থিতিতে আজকের ম্যাচটিকে সিরিজে টিকে থাকার লড়াই হিসেবেই দেখছেন সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,
“সিরিজে এখন দুইটি ম্যাচ বাকি আছে। সামনে তাকাতে হবে। দ্বিতীয় ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখানে জিততেই হবে।”
দলের পেস আক্রমণে পরিবর্তন আসছে। গোড়ালির চোট থেকে ফিরেই প্রথম ম্যাচ খেলা তাসকিন আহমেদকে বিশ্রামে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। তাঁর পরিবর্তে খেলতে পারেন হাসান মাহমুদ বা নাহিদ রানা। দুই পেসার খেললে বাড়তে পারে স্পিনার সংখ্যা—সেক্ষেত্রে রিশাদ হোসেনের পাশাপাশি বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামও একাদশে থাকতে পারেন।
তবে দলে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন মিরাজ নিজেও। ধারাবাহিকভাবে পাঁচ ম্যাচে উইকেটশূন্য এই অফস্পিনার। ব্যাটিংয়েও নেই তেমন উল্লেখযোগ্য অবদান। ফলে লঙ্কানদের বিপক্ষে জয় পেতে হলে তাঁকেই নেতৃত্ব দিতে হবে ‘অলআউট’ মানসিকতা দিয়ে।
প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটিংয়ের শুরু ভালো হলেও হঠাৎ ভুলের চক্রে পড়ে যায় দল। এ নিয়ে টিম মিটিংয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। কোচ ফিল সিমন্স ইংল্যান্ডে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার আগে দলকে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে গেছেন—“যে ব্যাটার সেট হবে, তাকে ইনিংস বড় করতেই হবে।”
তামিম জানান, “হাসারাঙ্গার মতো বোলারদের বিপক্ষে বাঁহাতি ব্যাটারদের ভালো সুযোগ থাকে। এসব ছোট ছোট তথ্য দেওয়া হয়েছে খেলোয়াড়দের। আশা করি কাজে দেবে।”
প্রথম ম্যাচ শেষে শ্রীলঙ্কার কোচ সনাথ জয়াসুরিয়া বলেন, “কন্ডিশন ব্যাটিংয়ের জন্য উপযুক্ত ছিল। আমরাও কিছুটা সংগ্রাম করেছি, তবে ২৪৪ রান তুলেছি। এখানে যারা সেট হবে, তাদের ইনিংস বড় করতেই হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাটিং ব্যর্থতা উইকেট বা কন্ডিশনের পেছনে না ঢেকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাবকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকেরা।
গত দেড় বছরে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, তারা অনেক ম্যাচেই কিছু সময় ভালো খেললেও পুরো ম্যাচে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ব্যর্থ। খেলোয়াড়রাও বুঝতে পারছেন, এই ধারা না বদলালে সিরিজ হার তো বটেই, সামগ্রিকভাবে দল আরও পিছিয়ে পড়বে।
এমন বাস্তবতায় আজকের ম্যাচে মিরাজদের সামনে একটাই সমীকরণ—পরিপূর্ণ ক্রিকেট খেলেই জয় ছিনিয়ে আনতে হবে। না হলে লঙ্কানদের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের শঙ্কা নিয়েই ক্যান্ডির পথে পা বাড়াতে হবে বাংলাদেশকে।
তবে সবকিছুর মাঝেও আশা ছাড়ছেন না টাইগার সমর্থকেরা। কারণ, আশায়ই ঘরবসতি—এটাই তো ক্রিকেট।
১৩১ বার পড়া হয়েছে