সর্বশেষ

সারাদেশ

দেশেই শুরু হয়েছে চাষ, ১ কেজি কুমিরের মাংসের দাম ৩০ ডলার 

বান্দরবান প্রতিনিধি
বান্দরবান প্রতিনিধি

বৃহস্পতিবার , ৩ জুলাই, ২০২৫ ৭:৫৬ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
দেশের একমাত্র বাণিজ্যিক কুমির প্রজনন খামার গড়ে উঠেছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু পাহাড়চূড়ায়।

২৫ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই খামারে রয়েছে প্রায় ৩ হাজার কুমির। এর মধ্যে এক হাজারেরও বেশি কুমির রপ্তানিযোগ্য হলেও দীর্ঘদিনের আইনি জটিলতায় তা আটকে আছে এক যুগ ধরে। ফলে খামারটি লাভের মুখ দেখেনি এখনো, অনিশ্চয়তায় রয়েছে ভবিষ্যৎও।

২০০৮ সালে 'আকিজ ওয়াইল্ডলাইফ ফার্ম লিমিটেড' নামে খামারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে ৫০টি লোনাপানির কুমির এনে শুরু হয় প্রজনন কার্যক্রম। এর মধ্যে ৩১টি ছিল স্ত্রী কুমির। গত ১৪ বছরে এসব কুমির থেকে ডিম ফেটে জন্ম নিয়েছে সহস্রাধিক ছানা।

প্রজনন মৌসুম শুরু হয় এপ্রিলে এবং চলতে থাকে আগস্ট পর্যন্ত। খামার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে ইতোমধ্যে ২০০টির মতো ছানা জন্ম নিয়েছে, এবং আরও ১৫০টি ছানার জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে কুমিরের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজারে দাঁড়াতে যাচ্ছে।

খামারে থাকা কুমিরগুলোর মধ্যে এক হাজারের বেশি এখন রপ্তানিযোগ্য। এগুলোর গড় ওজন ২০-২৫ কেজি এবং দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুটের কাছাকাছি। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি কুমিরের মাংসের দাম প্রায় ৩০ ডলার। অনুমতি মিললে কুমির রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।

দর্শনার্থীদের ভিড়, আয়ের সামান্য সহায়
রপ্তানি বন্ধ থাকলেও কুমির দেখার জন্য প্রতিদিন খামারে ভিড় করেন দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীরা। ৫০ টাকা টিকিট কেটে দর্শনার্থীরা বেষ্টনীর বাইরে দাঁড়িয়ে কুমিরের দৌড়ঝাঁপ, আহার আর রোদ পোহানোর দৃশ্য উপভোগ করেন। খামারের ইনচার্জ জীবন খান জানান, দর্শনার্থীদের জন্য বেষ্টনীর কক্ষগুলো খোলা রাখা হয় নির্ধারিত সময় অনুযায়ী।

রক্ষণাবেক্ষণে ব্যস্ত কর্মীরা
খামারের ১০ জন কর্মী কুমিরদের নিয়মিত খাওয়ানো ও পরিচর্যায় নিয়োজিত। কুমির ছানাদের প্রতিদিন মুরগি ও গরুর মাংসের কিমা খাওয়ানো হয়, আর বড় কুমিরদের খাওয়ানো হয় সপ্তাহে একবার। খামারের এক কর্মী জানান, “বেশি খাওয়ালে কুমিরের শরীরে চর্বি জমে, তখন স্ত্রী কুমির ডিম দিতে পারে না।”

রপ্তানির অপেক্ষায় এক যুগ
খামার কর্তৃপক্ষের দাবি, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না থাকায় এক যুগ ধরে রপ্তানি আটকে আছে। ফলে শত কোটি টাকার কুমির রপ্তানিযোগ্য হলেও বাজারজাত করা যাচ্ছে না।

অথচ দেশের বাইরে কুমিরের মাংস, চামড়া এবং অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী খামারটি গড়ে তোলা হলেও শুধুমাত্র প্রশাসনিক অনুমতির অভাবে থমকে আছে সম্ভাবনার এক বড় উৎস।
 

১২৬ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন