সতর্ক না হলে দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গু রূপ নিতে পারে মহামারিতে

বৃহস্পতিবার , ৩ জুলাই, ২০২৫ ৫:১৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আবারও উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ। খুলনা বিভাগসহ বেশ কয়েকটি জেলা বর্তমানে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলায় এডিস মশার লার্ভা বিস্তারের হার আশঙ্কাজনক। ঝিনাইদহ শহরের ২৭০টি বাড়ির মধ্যে ১৬২টিতে লার্ভা পাওয়া গেছে, যেখানে ব্রুটো ইনডেক্স (BI) ৬০ শতাংশ যা চরম ঝুঁকির ইঙ্গিত। মাগুরার ব্রুটো ইনডেক্স ৫৫.৫ শতাংশ। তবুও এসব জেলায় কার্যকর মশক নিধন কর্মসূচির তেমন দেখা মিলছে না।
জুন-জুলাই মাসেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, যেখানে সাধারণত সংক্রমণের মৌসুম ধরা হয় আগস্ট থেকে ডিসেম্বর। গত এক সপ্তাহে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ১১৭ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন ৫৭ জন।
চিকিৎসকরা বলছেন, এবারের সংক্রমণে নতুন উপসর্গ যেমন: জ্বরের সঙ্গে কাঁপুনি, বমি এবং অতিরিক্ত দুর্বলতা দেখা দিচ্ছে। খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে এসব উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়েছে। বরগুনা জেলায় ভয়াবহভাবে ডেঙ্গু ছড়ানোর কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সংরক্ষিত বৃষ্টির পানি। একই রকম পরিস্থিতি খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের উপকূলীয় এলাকাতেও রয়েছে, যেখানে মানুষ ড্রাম, ট্যাংক ও অন্যান্য পাত্রে পানি জমিয়ে রাখে যা এডিস মশার প্রজননের জন্য উপযুক্ত।
খুলনা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার জানান, ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়লেও সিটি করপোরেশনের কার্যকর পদক্ষেপ তেমন দেখা যাচ্ছে না। মশা নিধন কার্যক্রম আগের তুলনায় কমে গেছে বলেও অভিযোগ তার। হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি নিয়েও রয়েছে অসন্তোষ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার ডেঙ্গুতে ডেঙ্গু ওয়ান সেরোটাইপ ছড়াচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী দিদারুল ইসলাম বলেন, “এই সেরোটাইপ নিয়ন্ত্রণে শুধুমাত্র লার্ভিসাইড যথেষ্ট নয়, বরং দরকার সমন্বিত প্রতিরোধ কার্যক্রম।”
তবে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মজিবুর রহমান জানান, সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মশক নিধন ও চিকিৎসা প্রস্তুতি জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর খুলনা বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০ হাজারের বেশি এবং মারা গিয়েছিলেন ৩৫ জন।
১২৩ বার পড়া হয়েছে