বেনাপোল কাস্টমসে অতিরিক্ত ৩১৬ কোটি রাজস্ব আদায়

বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫ ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমস হাউস লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১৬.৫১ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় করেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক নির্ধারিত ৬,৭০৫ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭,০২১.৫১ কোটি টাকা, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪.৭২ শতাংশ বেশি।
কাস্টমস সূত্র জানায়, আগের অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে ৫,৯৪৮ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকলেও আদায় হয়েছিল ৬,১৬৭.৩৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সে বছরও ২১৯.৩৮ কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হয়েছিল।
রাজস্ব বেড়ে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা, রাজস্ব বোর্ডের কলম বিরতি ও শাটডাউনের মধ্যেও বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা দফতরে উপস্থিত থেকে রাজস্ব আদায়ের তদারকি চালিয়ে গেছেন। ফলে ধারাবাহিকভাবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ স্থলবাণিজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশই বেনাপোল বন্দর দিয়ে সম্পন্ন হয়। এই বন্দরের মাধ্যমে বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয় এবং সরকার সরাসরি ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে।
চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৫,৩৪,৩৪০.২১ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কম হলেও রাজস্ব আদায় বেড়েছে। কাস্টমস কর্মকর্তাদের কঠোর নজরদারি, সঠিক শুল্কায়ন ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলেই এই সাফল্য এসেছে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কমিশনার মো. কামরুজ্জামান।
তিনি আরও বলেন, "চলতি অর্থবছরে আমদানি পরিমাণে প্রায় ৮ শতাংশ হ্রাস পেলেও রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩.৫১ শতাংশ। এটা বেনাপোল কাস্টমস হাউসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।"
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা জানান, প্রতিদিন গড়ে ৪০০-৫০০ ট্রাক পণ্য আমদানি এবং ১৫০-২০০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাজস্ব ফাঁকি রোধে কঠোর অবস্থানে থাকায় অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন তরফদার জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩,৮১,৪৪০.৭৭ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৩০,৬৬৫.১৫ মেট্রিক টন কম। তবে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে, যা ভবিষ্যতে কার্যক্রম আরও গতিশীল করবে।
কাস্টমস কমিশনার জানান, রাজস্ব ফাঁকি রোধে 'জিরো টলারেন্স' নীতির আওতায় প্রতিটি অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ফলে শুল্ক ফাঁকির প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে এবং রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা এসেছে।
১৮৬ বার পড়া হয়েছে