সর্বশেষ

জাতীয়

পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলা পুনঃতদন্তে দুদক

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫ ৮:৩০ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলাটি আবার আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলাটি পুনঃতদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সংস্থার বর্তমান চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, যথেষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও আগের কমিশন মামলাটি গায়ের জোরে নিষ্পত্তি করেছিল।

মঙ্গলবার রাজধানীর দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, “মামলার উপাদানগুলো বিশ্লেষণ করে আমাদের মনে হয়েছে, আগের কমিশন তদন্তের প্রকৃত দিকগুলো আমলে নেয়নি। সে কারণেই আমরা মামলাটি পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে কানাডীয় প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিন এবং সংশ্লিষ্ট সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুই বছর তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর কমিশন অভিযোগপত্রে উল্লেখ করে, আমলযোগ্য কোনো দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি।

দুদকের নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন পুনরায় খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেয়, তদন্ত যথাযথ হয়নি। এ জন্য উপপরিচালক মো. তানজির হাসিব সরকারকে পুনঃতদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।


মামলায় যাঁদের আসামি করা হয়েছিল তাঁরা হলেন, সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইয়া, প্রকৌশলী কাজী ফেরদাউস, রিয়াজ আহমেদ জাবের, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইপিসিএল-এর ডিএমডি গোলাম মোস্তফা, এসএনসি-লাভালিনের প্রাক্তন পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল, ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ, কেভিন ওয়ালেস।

 

তবে মামলার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর নাম, যদিও মামলার বিবরণে সৈয়দ আবুল হোসেনের নাম ছিল।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “পরামর্শক নিয়োগে ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্র ও অনিয়ম ছিল স্পষ্ট। এটি দণ্ডবিধির ১২০(বি), ১৬১ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”

তিনি আরও বলেন, “মূল্যায়ন কমিটি একাধিকবার বদল করা হয়েছে অসৎ উদ্দেশ্যে। সরকারি বিধি-বিধান, পিপিএ ও পিপিআর লঙ্ঘন করে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

এ বিষয়ে কানাডার একটি আদালতও দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি। বিশ্বব্যাংকও অর্থ ছাড় করেনি। যদিও তারা প্রকল্পের পরামর্শক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতির অভিযোগ তোলে এবং ২০১২ সালে দু’দফা বিশেষজ্ঞ প্যানেল পাঠিয়ে তদন্ত চালায়।

বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের পর সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতু ২০২২ সালে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

সাবেক দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বলেছেন, “প্রয়াত জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত মূল্যায়ন কমিটি প্রকল্পে কোনো দুর্নীতির তথ্য পায়নি। কানাডার আদালতও দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি। এখন নতুন করে তদন্ত করে আদৌ কিছু পাওয়া যাবে কি না, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।”

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, “যদি নতুন করে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে আইন অনুযায়ী অনুসন্ধানে কোনো বাধা নেই। তবে অভিযোগ প্রমাণে যথাযথ তথ্য-প্রমাণ দাখিল করতে হবে।”

১৪২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন