গণতন্ত্রের পক্ষে শপথ জুলাই কর্মসূচি উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫ ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পুনরুত্থান কর্মসূচি’র উদ্বোধন করে বলেছেন, স্বৈরশাসনের শিকড় গোঁড়া থেকেই উপড়ে ফেলতে হবে।
এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে দেশের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, “গত বছর এই সময়টাতেই ছাত্র, শ্রমিক, রিকশাচালকসহ সর্বস্তরের মানুষ যে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল, তা ছিল এক ঐতিহাসিক জাগরণ। তাদের আত্মত্যাগ ও সাহসিকতার ভিত্তিতে আমরা এই কর্মসূচি নিয়ে মাসজুড়ে আবার সেই দিনগুলো স্মরণ করব, নতুনভাবে শপথ নেব। এই আয়োজন প্রতিবছর করা হবে, যেন কোনো স্বৈরাচার আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।”
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। সেখানে অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, “জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান ছিল স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় গণজাগরণ। সেটি শুধু একটি রাজনৈতিক ঘটনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং তা ছিল একটি রূপান্তরের ডাক রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান।”
তিনি বলেন, “১৬ বছর পর আমরা যে গণ-বিদ্রোহ করেছিলাম, তা তাৎক্ষণিকভাবে কিছু অর্জন করলেও, আমাদের সামনে ছিল একটি বিশাল স্বপ্ন একটি নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্মাণের। এই কর্মসূচি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আবার আমাদের উৎসাহিত করবে।”
অধ্যাপক ইউনূস দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই কর্মসূচি যেন শুধু স্মৃতিচারণ না হয়। বরং তা হয়ে উঠুক এক সামাজিক প্রতিজ্ঞাম যে কোনো স্বৈরাচারী শক্তির উত্থান ঠেকাতে জনগণ সর্বদা প্রস্তুত থাকবে। আমাদের যেন আর ১৬ বছর অপেক্ষা না করতে হয়।”
তিনি আরও বলেন, “স্বৈরতন্ত্রের যতটা সম্ভব শুরুর দিকেই তা প্রতিরোধ করতে হবে। এজন্য প্রতিবছর এই কর্মসূচি পালনের বিকল্প নেই।”
জুলাই অভ্যুত্থানে জীবন দেওয়া ও অংশ নেওয়া সব শ্রেণির মানুষকে স্মরণ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “তরুণ-তরুণী, কৃষক-শ্রমিক, রিকশাচালকসহ যে সব মানুষ রাজপথে নেমে গণতন্ত্রের পতাকা উঁচিয়ে ধরেছিলেন, তাঁদের সাহস, ত্যাগ এবং দৃঢ়তাকে আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি।”
দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “চলতি জুলাই-আগস্টজুড়ে আমাদের কর্মসূচি শুধু অতীত স্মরণের নয় বরং তা এক নতুন শপথের আহ্বান। গত বছর যেভাবে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্র হয়েছিল, এবারও চাই সেই ঐক্য আরও মজবুত হোক।”
তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো জনগণকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, গণতান্ত্রিক সংস্কার রক্ষার জন্য সক্রিয় রাখা এবং রাষ্ট্রকে সত্যিকারের জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল কাঠামোয় নিয়ে যাওয়া। সামনে কঠিন পথ থাকলেও জনগণের ঐক্যই আমাদের আসল শক্তি।”
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী এবং শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারও বক্তব্য দেন।
১২৪ বার পড়া হয়েছে