কোটা সংস্কার দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের এক বছর: ফের উত্তাল হচ্ছে রাজপথ

মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫ ৪:২০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে গত বছরের ১ জুলাই যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা আজ এক বছর পূর্ণ করল।
ঠিক এক বছর আগে, ২০২৪ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক ছাত্র-সমাবেশ ও মিছিলের মধ্য দিয়ে আন্দোলনের সূচনা হয়।
সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে ভিড় করেন বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশী। পরে সেখান থেকে মিছিল বের হয়ে কলাভবন, মলচত্বর, সূর্যসেন হল, মুহসীন হল ও বসুনিয়া তোরণ ঘুরে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়।
রাজু ভাস্কর্যে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আন্দোলনের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম (বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি—এনসিপি’র আহ্বায়ক) সরকারের প্রতি ৪ জুলাইয়ের মধ্যে কোটা সংস্কার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “৪ জুলাইয়ের মধ্যে আইনিভাবে আমাদের দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সুরাহা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের হল, গ্রন্থাগার ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা চালু রাখতে হবে। প্রত্যয় স্কিমের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে আমরা একাত্ম; কিন্তু শিক্ষার্থীদের অধিকার যেন ক্ষুণ্ন না হয়।”
সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা ২, ৩ ও ৪ জুলাই শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। একই দাবিতে ওই সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
এর পেছনের প্রেক্ষাপট ছিল, ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্ট এক রায়ে সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল সংক্রান্ত সরকারী পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করেন। এই রায় ঘোষণার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় ছাত্রদের বিক্ষোভ।
তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করলে ৪ জুলাই শুনানির দিন ধার্য হলেও সেটি অনুষ্ঠিত হয়নি, যা আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ আরও ঘনীভূত করে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও বিষয়টি এখনও আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যেই রয়েছে। আবারও রাজপথে সক্রিয় হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
১৩১ বার পড়া হয়েছে