সর্বশেষ

সারাদেশ

দুদিনে রপ্তানি হয়নি সাত হাজারের বেশি কনটেইনার

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫ ৬:০১ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের আন্দোলন এবং ঈদুল আজহার ছুটির পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দরে ভয়াবহ পণ্যজট দেখা দিয়েছে।

গত শনিবার ও রোববার (২৯ ও ৩০ জুন) এই দুইদিনে বন্দরে রপ্তানি হয়নি সাত হাজারের বেশি কনটেইনার পণ্য। এটি দেশের শীর্ষ সমুদ্র বন্দরের ইতিহাসে রপ্তানি স্থবিরতার দিক থেকে অন্যতম বড় ঘটনা বলে জানা গেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চলমান কলমবিরতি এবং পরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে কাস্টমসের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ফলে ডিপো থেকে বন্দরে কোনো রপ্তানি পণ্য পাঠানো সম্ভব হয়নি, আবার আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন ও ডেলিভারিও বন্ধ ছিল।

ডিপোগুলোর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিনই কারখানা থেকে আসা রপ্তানি পণ্য জমা হচ্ছে, কিন্তু শুল্কায়ন কার্যক্রম না হওয়ায় পণ্য কনটেইনারে ভরার প্রক্রিয়া থমকে গেছে। এতে ডিপোগুলোতে স্থান সংকট এবং ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।

জাহাজগুলো দাঁড়িয়ে, পণ্য অপেক্ষায়
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, রোববার জেটিতে থাকা তিনটি জাহাজ এএস সিসিলিয়া, এক্সপ্রেস নিলওয়ালা ও হং ডা জিন-৬৮ রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে যাত্রা করার কথা ছিল। কিন্তু বুকিং অনুযায়ী কনটেইনার না আসায় জাহাজগুলো নির্ধারিত গন্তব্যে ছাড়তে পারেনি। এএস সিসিলিয়া জাহাজে ৫৬৪ কনটেইনার, এক্সপ্রেস নিলওয়ালায় ১,৪৬০ এবং হং ডা জিন-৬৮ তে ১,৬৬৬ কনটেইনার রপ্তানির জন্য প্রস্তুত ছিল।

মেডিটেরানিয়ান শিপিং কোম্পানির অপারেশন প্রধান আজমীর হোসেন চৌধুরী বলেন, “এই কনটেইনারগুলো সিঙ্গাপুরে যাওয়ার কথা, সেখান থেকে ইউরোপ ও আমেরিকামুখী বড় জাহাজে তোলা হতো। এখন সব সময়সূচি এলোমেলো হয়ে গেছে।”

রপ্তানিকারকদের ক্ষতির আশঙ্কা
বিজিএমইএর পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, “শুল্কায়ন বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা রপ্তানি পণ্য জাহাজে তুলতে পারছেন না। জুন মাসে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধসহ নানা আর্থিক দায় থাকে। এই পরিস্থিতিতে অনেক প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের ক্ষতির মুখে।”

কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, কাস্টমসের আন্দোলনের কারণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। নতুন কোনো কনটেইনার খালাস হয়নি এবং ডিপো থেকেও বন্দরে পণ্য আসেনি।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র সাইদুল ইসলাম বলেন, “এনবিআরের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশজুড়ে চলা কর্মসূচিতে চট্টগ্রামের কর্মকর্তারাও অংশ নিয়েছেন। ফলে কাস্টমস কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ।”

এক কাস্টম কর্মকর্তা জানান, ঢাকায় এনবিআরে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে অনেক কর্মকর্তা চট্টগ্রাম ছেড়েছেন। যাঁরা রয়ে গেছেন, তারাও আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন। ফলে কাস্টম হাউসে কার্যত লোকশূন্য অবস্থা বিরাজ করছে।

সংশ্লিষ্টদের আহ্বান
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, “কিছুদিন আগেই কলমবিরতিতে ভয়াবহ জট তৈরি হয়েছিল। এখন আবার এমন কর্মসূচি রপ্তানি খাতকে বড় ঝুঁকিতে ফেলেছে।”

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, চলমান অচলাবস্থা অব্যাহত থাকলে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। দ্রুত সমাধান না হলে তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য রপ্তানি খাত মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে।

১৭১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন