সর্বশেষ

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রকে আগ্রাসন থেকে বিরত থাকার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে: ইরান

ডেস্ক রিপোর্ট
ডেস্ক রিপোর্ট

সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫ ৫:৫৬ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
ইরানের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই আগাম প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে তারা আর কোনো সামরিক হামলা চালাবে না এমনটাই জানিয়েছেন তেহরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখত-রাভাঞ্চি।

সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

তাখত-রাভাঞ্চি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আলোচনা ফের শুরু করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও, তারা এখনো স্পষ্ট করে জানায়নি আলোচনা চলাকালে আর কোনো হামলা চালানো হবে না।

গত ১৩ জুন ইসরায়েলের ইরানে সামরিক হামলার পর, ওমানে নির্ধারিত ষষ্ঠ দফা আলোচনা বাতিল হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে এবং ইরানের ফোর্দো, নাতানজ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বিমান হামলা চালায়। পাল্টা জবাবে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েলের ওপর।

তাখত-রাভাঞ্চি বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করতে চাই। আমাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার নিয়ে কোনো আপস হবে না।” তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আচরণকে ‘আন্তর্জাতিক নিয়মের বাইরে’ এবং ‘জঙ্গলের আইন’ বলে অভিহিত করেন।

এই সংঘাতে কতটা ক্ষতি হয়েছে তা এখনও পরিপূর্ণভাবে নির্ধারিত হয়নি। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, ক্ষতি গুরুতর হলেও ইরানের কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবি, ইরানের স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে।

বর্তমানে ইরান ও IAEA-র সম্পর্কও চরম উত্তেজনাপূর্ণ। ইরানি পার্লামেন্ট সম্প্রতি একটি প্রস্তাব পাস করে IAEA-র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেছে অভিযোগ করে যে সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পক্ষ নিচ্ছে।

২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ৩.৬৭ শতাংশের বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারত না। তবে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে গেলে ইরানও ধীরে ধীরে সীমা অতিক্রম করতে থাকে। বর্তমানে দেশটি ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা দিয়ে IAEA-এর মতে, অন্তত ৯টি পারমাণবিক বোমা তৈরির মতো উপাদান রয়েছে।

তাখত-রাভাঞ্চি আরও বলেন, “যদি কেউ সত্যিই আলোচনা চায়, তাহলে তাকে বিশ্বাসযোগ্য বার্তা দিতে হবে— আগ্রাসন বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। না হলে আলোচনা অর্থহীন।”

তিনি জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আপাতত চলছে। তবে এটি কতদিন স্থায়ী হবে তা নির্ভর করছে ভবিষ্যতের ঘটনাপ্রবাহের ওপর। আরব উপসাগরীয় কয়েকটি দেশ, বিশেষ করে কাতার, শান্তি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইরানে সরকার পতনের ডাক দিলেও, ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, তিনি সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন না। এই প্রসঙ্গে তাখত-রাভাঞ্চির মন্তব্য, “এই ধরনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। ইরানের জনগণ রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও বিদেশি হুমকির মুখে একত্র হয়ে দাঁড়াবে।”

শেষে তিনি বলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা বিশ্বাস করি কূটনীতিতে। কিন্তু একইসঙ্গে সতর্কও থাকতে হবে কারণ, শান্তির প্রস্তাবের আড়ালেও হামলা হতে পারে।”

১০৬ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
আন্তর্জাতিক নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন