সর্বশেষ

সারাদেশ

কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির কাউন্সিলে ভোট

কারচুপির অভিযোগ সভাপতি প্রার্থীর, সিলমারা ব্যালট মিললো টয়লেটে

স্টাফ রিপোর্টার, কুষ্টিয়া
স্টাফ রিপোর্টার, কুষ্টিয়া

রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫ ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির কাউন্সিলে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন সভাপতি পদে পরাজিত হেভিওয়েট প্রার্থী আখতারুজ্জামান ওরফে কাজল মাজমাদার।

তিনি অভিযোগ বলেন, এই অনিয়ম ও ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি এবং পুনরায় নির্বাচনের দাবি করছি।

এদিকে এ বিষয়ে রোববার (২৯ জুন) বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া এন এস রোডে একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন চলাকালে সেখানে খবর পৌঁছায়, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসের টয়লেটে সভাপতি পদে পরাজিত প্রার্থী আখতারুজ্জামান ওরফে কাজল মাজমাদারের চেয়ার প্রতীকের সিলমারা বেশ কিছু ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দুপুর থেকেই দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয়।

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জনপ্রিয় কাজল মাজমাদার বলেন, নির্বাচন ঘিরে জনমনে নানা সংশয় থাকলেও আমরা দলের বৃহত্তর স্বার্থে এবং গণতন্ত্রের অনুশীলনের জন্য এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে বারবার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। ‌কিন্তু আমাদের আশঙ্কাকে সত্যি করে নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন সম্পন্ন করতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। কমিশন তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছে এবং নানামুখী বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারকে নির্বাচন পাতানোর জন্য দায়ী করে প্রভাবশালী এই নেতা বলেন, ‌‌‌‌তাদের থেকে আমরা দূরে ছিলাম। কিন্তু তারা সুষ্ঠু ভোটের কথা বলে ডেকে এনে আমাদের সঙ্গে চরম প্রতারণা করেছেন। আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল একটি সুষ্ঠু ভোটের, সেই ওয়াদা তারা রক্ষা করেননি।

এর আগে শুক্রবার (২৭ জুন) কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিল শেষে ভোটে সভাপতি পদে কুতুব-জাকিরের অনুগত একে বিশ্বাস বাবু ও সাধারণ সম্পাদক পদে কামাল উদ্দিনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে কাজল মাজমাদার ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট পুনর্গণনার আহ্বান জানান। পরদিন শনিবার পুনর্গণনা শেষে চার ভোট বেড়ে কাজলের ভোটের সংখ্যা হয় ৫৯৯। অন্যদিকে জয়ী প্রার্থী বাবুর ভোট সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াই ৬১১।

এ তথ্য জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কাজল মাজমাদার বলেন, চার ভোট বেড়ে যাওয়ায় প্রমাণ হয়, ভোটে কারচুপি হয়েছে। তাছাড়া এইমাত্র আমরা খবর পেলাম, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের টয়লেটে শতাধিক সিলযুক্ত ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানাই।

সার্বিক অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির অভিযুক্ত সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, ভোটের সারাদিন কারও কোনো অভিযোগ ছিল না। ভোট গণনার সময় কোনো অভিযোগ ছিল না। কিন্তু ফলাফলের পরই তাদের যত অভিযোগ। আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে শতভাগ স্বচ্ছ একটি নির্বাচন করেছি। এখানে কারচুপির অভিযোগ ভিত্তিহীন।

দলীয় সূত্র জানায়, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর কুতুব উদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক এবং প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারকে সদস্য সচিব করে কেন্দ্র থেকে প্রথমে দুই সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত কমিটিতে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী বাদ পড়ায় কমিটি ঘোষণার পরের দিন থেকেই এই কমিটি বাতিলের দাবিতে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে দলটির পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ। সবশেষ শুক্রবার অনুষ্ঠিত পৌর বিএনপির নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্ক যেন আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে। 

১৫৯ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন