আলোচনায় অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক নয়: সপ্তম দিনের আলোচনায় আলী রীয়াজ

রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫ ৬:৪৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
জাতীয় ঐকমত্য গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান আলোচনার অগ্রগতি আশানুরূপ নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, “আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম, আবু সাঈদের শাহাদাতবার্ষিকীতে সবাই মিলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, আমরা হয়তো সে জায়গায় পৌঁছাতে পারব না।”
রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের দ্বিতীয় দফার সপ্তম দিনের আলোচনার শুরুতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, আজকের আলোচনায় নতুন কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এখনো ঐকমত্য না হওয়ায় সেগুলো নিয়েই আবার আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পদ্ধতি, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন, উচ্চকক্ষের দায়িত্ব, নির্বাচনপ্রক্রিয়া ও ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা।
গত বছরের জুলাই মাসের প্রসঙ্গ টেনে আলী রীয়াজ বলেন, “সেই সময় আমরা দলীয় পতাকা নয়, দেশের পতাকা তুলে ধরেছিলাম। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে দেশের স্বার্থে এক হয়েছিলাম। কিন্তু আজ সেই প্রত্যাশিত ঐক্যের প্রতিফলন দেখছি না।”
তিনি বলেন, “জুলাই মাসের মধ্যেই আলোচনার একটি ফলাফলের দিকে যেতে হবে। ভবিষ্যতে যেন কেউ এককভাবে সাংবিধানিক পরিবর্তন করে জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে কিছু করতে না পারে—সেটা সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।”
একনায়কতন্ত্রের শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যক্তির ক্ষমতা হ্রাস এবং স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাংবিধানিক রক্ষাকবচ তৈরি সময়ের দাবি।
আলোচনায় অংশ নেওয়া দলগুলোর উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা কি আবার পুরোনো অবস্থায় ফিরে যাব? নাকি দেশের স্বার্থে ঐক্যমতে পৌঁছাতে চাইব? আমরা শুধু দলের স্বার্থ দেখব, না দেশের স্বার্থও বিবেচনায় আনব?”
তিনি দাবি করেন, সংস্কার প্রস্তাবের ক্ষেত্রে কমিশন নমনীয়তা দেখিয়েছে এবং বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাব বিবেচনায় এনেছে। “কমিশন কোনো দলের প্রতিপক্ষ নয়। বরং আমরা চাই একটি স্থিতিশীল, অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তি তৈরি হোক।”
সভাটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। এছাড়া আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান ও মো. আইয়ুব মিয়া।
১২৬ বার পড়া হয়েছে